—প্রতীকী ছবি।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে মৎস্য দফতরে বাজেট বরাদ্দ হয়েছিল ৪০১ কোটি টাকা। সেই অর্থ বছর শেষ হতে আর মাত্র দু’মাস বাকি। অভিযোগ, বাজেট বারদ্দের ৪০১ কোটি টাকার মধ্যে খরচ হয়েছে মাত্র ৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বাজেটের চার ভাগের এক ভাগও খরচ হয়নি।
বাজেট বরাদ্দের এত টাকা খরচ না হওয়াটা মৎস্য দফতরে সর্বকালীন রেকর্ড বলে দাবি করছেন আধিকারিকদের একাংশ। বাজেটের টাকা খরচ না হওয়ায় বেশিরভাগ জেলার মৎস্য কর্মধ্যক্ষরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের অভিযোগ, জেলার ক্ষুদ্র মাছচাষীরা বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা পাবেন। অনেক প্রকল্পের কাজে হাতও দেওয়া হয়নি।
সূত্রের খবর, দফতরের অধীনে ডাইরেক্টরেট ও সচিবালয় দু’টি পৃথক ভাগ রয়েছে। অভিযোগ, এই দু’টি দফতরের মধ্যে চূড়ান্ত সমন্বয়ের অভাব থাকায় চলতি বছরে বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজে হাত দেওয়া যায়নি।
তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে এ রাজ্যে মাছ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় বড় জলাশয়ে বিশালাকার রুই, কাতলা চাষ করে বিশেষ নজির সৃষ্টি করেছেন সেখানকার চাষীরা। মুখ্যমন্ত্রী সারা রাজ্যে ‘ময়না মডেল’-এর অনুকরণে বড় মাছচাষের প্রকল্প চালু করেছিলেন। অভিযোগ, চলতি বছরে ‘ময়না মডেল’-এ মাছচাষের জন্য কোনও প্রকল্পই গৃহীত হয়নি।
অভিযোগ, চলতি অর্থ বছরে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প, ‘সোশ্যাল ফিশারিজ় স্কিম’ (সামাজিক মাছচাষ প্রকল্প) থেকে শুরু করে মাছচাষীদের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক কোনও প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়নি। দফতর সূত্রে খবর, ‘সোশ্যাল ফিশারিজ়’ প্রকল্পে এক বিঘা জলাশয়ে এক হাজার চারাপোনা চাষ করার জন্য ছোট মাছচাষীদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু বেশিরভাগ জেলার মৎস্য কর্মধ্যক্ষরা জানাচ্ছেন, ওই প্রকল্পে প্রান্তিক মাছচাষীদের মাত্র এক হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা না পাওয়ায় অনেক মাছচাষী উৎসাহ হারাচ্ছেন। ক্ষুব্ধ দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের একাংশও।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরীর দাবি, ‘‘আমাদের দুই দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের কোনও অভাব নেই। একাধিক প্রকল্পের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। আশা করি বাকি টাকা দু’মাসে খরচ হয়ে যাবে।’’ কিন্তু ন’মাসের মধ্যে মোট বাজেট বরাদ্দের এক ভাগও খরচ না হওয়াকে ’ছুটি’কে দায়ী করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এ বছর বেশি ছুটি থাকায় টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হতে সমস্যা হয়েছে। তবে আশা করছি, আগামী দু’মাসে সমস্ত প্রকল্পের কাজ হবে। কোনও সমস্যা হবে না।’’
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘সরকার বলছে টাকার অভাবে কাজ করতে পারছে না। অথচ টাকা থাকলেও মৎস্য দফতর তা খরচ করতে পারছে না। এর থেকেই সরকার, প্রশাসনের অপদার্থতা পরিষ্কার। লক্ষ্য কাজ নয়, লক্ষ্য টাকা নষ্ট করা।’’