বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি পিটিআই।
নদিয়ায় গলায় গামছার ফাঁসে ঝুলন্ত এক যুবক তাদের সমর্থক বলে দাবি করে রবিবার হইচই বাধিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। সোমবার কল্যাণী বিধানসভা এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন্ধও ডাকা হয়। সেই বন্ধে কার্যত কোনও প্রভাবই পড়েনি। বরং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন মেনেই নিয়েছেন যে বিজয় শীল নামে ওই যুবক বর্তমানে প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও দলের রাজনীতি করতেন না।
রবিবার রাতেই বিজয়ের স্ত্রী কমলী শীল কল্যাণী থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, বিজেপি তাঁর স্বামীর মৃতদেহ নিতে চেয়ে চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি চান, মৃতদেহ নিয়ে বিনা বাধায় সৎকার করতে। কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে এ দিন পরিবারের হাতে মৃতদেহ দেওয়া হয়। যথাবিহিত সৎকারও হয়েছে।
এ দিন গয়েশপুরের বাড়িতে বসে কমলী এবং তাঁর একাধিক আত্মীয় বারবার দাবি করেন, বিজয় কোনও দলই করতেন না। কমলী বলেন, “আমার স্বামী কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। কোনও দলের রাজনীতি করতেন না। মিটিং-মিছিলেও কখনও যেতে দেখিনি। আমাদের পরিবারে কেউই কোনও রাজনীতি করেন না।” এলাকায় নানা অসামাজিক কাজর্মে জড়িত দু’জন তাঁর স্বামীকে খুন করে থাকতে পারে বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে লিখিত অভিযোগ সোমবার রাত পর্যন্ত হয়নি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ রবিবার মেদিনীপুরে বলেছিলেন, “যিনি মারা গিয়েছেন তিনি আমাদের দলেরই সমর্থক।” এ দিন বিজয়ের স্ত্রীর বক্তব্য শুনে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, উনি রাজনীতি করতেন না। এক কালে তৃণমূল করতেন, তার পর বসে গিয়েছিলেন।” তবে তাঁর দাবি, “ওই গোটা পরিবারটিই আমাদের সমর্থক। কিন্তু কে কার সমর্থক সেটা বড় কথা নয়, এ রাজ্যে একের পর এক মানুষ খুন হচ্ছেন, আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই, আমরা তারই প্রতিবাদ করছি।”
আবার কমলীর বক্তব্য প্রসঙ্গে নদিয়ার নেতা তথা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য মানবেন্দ্রনাথ রায় এ দিনও বলেন, “মানুষ তৃণমূলের ভয়ে কাঁটা। ওদের দলবল যখন বাড়ি ঘিরে রেখেছে, একটা গরিব পরিবার যে বয়ান বদল করবে, তাতে আশ্চর্য কী!” কল্যাণীর তৃণমূল বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের পাল্টা বক্তব্য, “যে মৃত্যুর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই তা নিয়ে বিজেপির জঘন্য অপপ্রচার কেউ ভাল ভাবে নেয়নি। মানুষ তাই এই বন্ধ সমর্থন করেনি।”