চাল কেনাবেচা চলছে। নিজস্ব চিত্র
আতপের চাহিদা বাড়ছে কয়েকটি দেশে, সেই সুযোগ নিতে তৈরি হচ্ছে সাগরদিঘিও।
জঙ্গিপুর মহকুমার সহকারী কৃষি অধিকর্তা উত্তম কোনাই জানান, সাগরদিঘিতে ভাল ধান হয়। কিন্তু যত ধান হওয়ার কথা, সেই তুলনায় উৎপাদন বাড়ছে না। এক নাগাড়ে প্রায় ২৫ বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে স্বর্ণ ধান চাষ তাই বন্ধ করে রাজেন্দ্র ভগবতী, স্বর্ণ সাব ১, প্রতীক, গোডরা বিধান, ডি আর আর ৪২, চিরাং সাব ১ ইত্যাদি নতুন প্রজাতির ধানে কৃষকরা উৎসাহী হলে ধান উৎপাদন অনেকটাই বাড়বে। তিনি বলেন, “স্বর্ণ ধানের উৎপাদন অনেক ক্ষেত্রেই এবারে ১২ মনেও নেমে এসেছে। যা এক সময় ছিল ২০ মনের কাছাকাছি। নতুন প্রজাতিগুলির উৎপাদন বিঘে প্রতি ২০ মণের উপরে। তাতে পোকার উপদ্রব কম। তা ছাড়া, সাধারণ ভাবে এই রাজ্যে এই সব ধান থেকে আতপ চাল করা হয় না। কিন্তু বর্তমানে এখান থেকে বহু চাষির ধান কিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্ধমানের কিছু চালকল মালিক তা নিয়ে যাচ্ছেন আড়তদারদের মাধ্যমে। বর্ধমানের মিলে আতপ করে তা যাচ্ছে সৌদি আরবে। নতুন প্রজাতির ধান থেকে সেক্ষেত্রেও ভাল লাভ
পাবেন চাষিরা।”
গাঙ্গাড্ডার এক ধানের কারবারি আমিনুল শেখ জানান, আতপের চাহিদার জন্য কিছু ধানের চাহিদা খানিকটা হলেও বেড়েছে। এই সব ধান আতপের জন্য ব্যবহার হয় না। কিন্তু সস্তার ধান বলে তা থেকে ধান সেদ্ধ না করে আতপ করা হচ্ছে বর্ধমানে কিছু চাল কলে। তাদের কাছ থেকে তা যাচ্ছে বিদেশে।আর এই কারণেই খোলা বাজারে কিছু ধানের দাম ১ হাজার ৫৫০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বেড়েছে।
জেলায় ৩৯টি চালকল থাকলেও কোনওটিতেই আতপ চাল করার ব্যবস্থা নেই। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে পরিকাঠামো পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন অনেকে। একটি চালকলের মালিক মুক্তি ধর বলছেন, ‘‘এখানে আতপের ব্যবস্থা নেই বলেই বর্ধমান যাচ্ছে এখানকার ধান। সেখান থেকে আতপ যাচ্ছে বিদেশে। যদি দেখা যায়, আতপ রফতানির সুযোগ আমরা পাচ্ছি, তা হলে মুর্শিদাবাদের চালকলেও সেই পরিকাঠামো তৈরি করতে কোনও অসুবিধে নেই।”
জেলার খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাঠকও বলছেন, “সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশে সেদ্ধ চালের ব্যবহার নেই। আতপেরই ব্যবহার হয়। তাই আতপের চাহিদা রয়েছে ওই সব দেশে। এবং তা যাচ্ছে এই রাজ্য থেকেই। মোটা চাল, তাই দামও কম। তাতে চাষিরাও কিছু বাড়তি
পয়সা পাবেন।’’