নজরে কাটোয়া-আহমদপুর

দূরপাল্লার ট্রেনের রুট বদলের দাবি

১৬ অগস্ট থেকে লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আপাতত বর্ধমান দিয়ে যাওয়া পাঁচটি ট্রেন কাটোয়ার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

ব্যান্ডেল-বর্ধমানের মধ্যে তৃতীয় লাইন পাতার কাজ চলছে। বাতিল হয়েছে বেশ কিছু লোকাল। পথ বদলেছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কিছু এক্সপ্রেস ট্রেন। বর্ধমানের পরিবর্তে কাটোয়া-আহমদপুর ও কাটোয়া-আজিমগঞ্জ হয়ে চালানো হচ্ছে ট্রেনগুলি। যাত্রীদের দাবি, এই সুযোগে তুলনামূলক কম ব্যবহৃত কাটোয়া থেকে আহমদপুর লাইনটি উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন বীরভূম ও কাটোয়ার যাত্রীরাও।

Advertisement

১৬ অগস্ট থেকে লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আপাতত বর্ধমান দিয়ে যাওয়া পাঁচটি ট্রেন কাটোয়ার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, ভায়া কাটোয়া-আহমদপুর হয়ে যাচ্ছে বেনারস এক্সপ্রেস, আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস, কবিগুরু এক্সপ্রেস ও হাওড়া-গয়া এক্সপ্রেস। আর ভায়া কাটোয়া-আজিমগঞ্জ লাইন দিয়ে যাচ্ছে দার্জিলিং মেল। যাত্রীদের একাংশের দাবি, ভাতার, বলগোনা, বর্ধমান, বড়শুল, শক্তিগড়ের মতো এলাকার যে বাসিন্দারা বর্ধমান স্টেশন থেকে এই ট্রেন ধরতেন তাঁদের বাড়তি ঘন্টা দেড়েক খরচ করে কাটোয়া এসে ট্রেন ধরতে অসুবিধা হচ্ছে। দুপুর সওয়া ১টায় কাটোয়া থেকে আপ কবিগুরু এক্সপ্রেসে উঠছিলেন মৃন্ময় কর, চৈতালী দত্ত। তাঁদের দাবি, ‘‘বর্ধমান শহরে থাকি। কাটোয়ায় ট্রেন ধরতে আসতে কমপক্ষে ঘন্টা দুয়েক বেশি লাগছে। তবে এটা সাময়িক, এটাই স্বস্তি।’’

তবে যে আহমদপুর লাইন দিয়ে দিনে এক জোড়া ট্রেন চলে, সেই লাইনে গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস চলায় খুশি কাটোয়া, কেতুগ্রামের বাসিন্দারা। কাটোয়া-বর্ধমান যাত্রী কমিটির সম্পাদক কিশোর দফাদার বলেন, ‘‘সকাল ৮টা ২০তে কাটোয়া থেকে ছেড়ে আহমদপুর যায় একটি লোকাল ট্রেন। আবার বেলা ১২টায় কাটোয়ায় ফিরে আসে। দিনভর লাইন ফাঁকা থাকে। সিঙ্গল লাইন হলেও এই রেলপথের পাঁচুন্দি, কান্দরা, কীর্ণাহার, লাভপুরে তিনটে করে লাইন রয়েছে। কাজেই এই পথ দিয়ে আনন্দবিহার, গয়ার মতো এক্সপ্রেসগুলি স্থায়ী ভাবে চলাচল করতে আমাদের সুবিধা হবে।’’ এতে কাটোয়া, কেতুগ্রামের যাত্রীদের বর্ধমান বা বোলপুর গিয়ে যেমন ট্রেন ধরতে হবে না, তেমনই বর্ধমান স্টেশনের উপরেও চাপ কমবে, তাঁর মত।

Advertisement

আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস ব্যান্ডেল থেকে কাটোয়া, আহমদপুর, রামপুরহাট হয়ে দুমকা দিয়ে দিল্লি গেলে কাটোয়া ও সংলগ্ন এলাকার পড়ুয়া, চাকুরিজীবি, পর্যটকদের সুবিধা হবে মনে করছেন অনেকেই। কাটোয়ার যাত্রীদের একাংশের মতে, এতে প্রায় ৪০ কিলোমিটার কম ঘুরতে হবে ট্রেনগুলিকে। সঙ্গে আহমদপুর রেলপথে লাভ বাড়বে।

‘ডিভিশনাল রেলওয়ে ইউজার্স কলসাল্টেটিভ কমিটি’-র প্রাক্তন সদস্য আশিস রায়ের কথায়, ‘‘যশবন্তপুর, অঙ্গ এক্সপ্রেসের মতো দক্ষিণ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগকারী কিছু ট্রেনও আহমদপুর দিয়ে চালানো যেতে পারে। এই লাইনের প্রচুর যাত্রী চিকিৎসা, শিক্ষা ও চাকরির জন্য ব্যঙ্গালুরু যান, যাঁদের বর্ধমান বা বোলপুরে গিয়ে ট্রেন ধরতে হয়। আহমদপর দিয়ে গেলে তাঁদের হয়রানি কমবে। যাত্রীও বাড়বে।’’

ভায়া কাটোয়া, আজিমগঞ্জ হয়ে যাওয়া আপ দার্জিলিং মেল বর্তমানে কাটোয়ায় ঢুকছে রাত সাড়ে ১২টায়। বর্ধমান থেকে আসা যাত্রীদের কাটোয়া পৌঁছে এত রাতে ট্রেন ধরতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে কাটোয়ার বৈশাখী দাস, সোমা সাহাদের দাবি, ‘‘বর্ধমান দিয়ে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সংযোগকারী একাধিক ট্রেন রয়েছে। সেখানে কাটোয়া দিয়ে যাওয়া ট্রেনের সংখ্যা হাতেগোনা। অথচ যাত্রী সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।’’

কাটোয়ার স্টেশন ম্যানেজার অরূপ সরকারের দাবি, ‘‘যাত্রীদের লিখিত দাবি কিছু পাইনি। তবে আহমদপুরের মতো রেলপথের গুরুত্ব বাড়লে এলাকার সুনাম বাড়বে।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এরকম দাবি লিখিত আকারে এলে বিবেচনা করে দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement