ইডির দফতরে আনিসুর রহমান এবং তাঁর ভাই আলিফ নুর। নিজস্ব চিত্র।
বেশ কিছু নথি নিয়ে ইডি দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হলেন দেগঙ্গার তৃণমূলের স্থানীয় ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমান এবং তাঁর ভাই আলিফ নুর। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা সিজিও কমপ্লেক্সে যান। প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় গত কয়েক দিন ধরেই তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। এই মামলার তদন্তে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বারিক বিশ্বাসকে তলব করে ইডি। একই সঙ্গে রেশন মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমানের আত্মীয় আলিফ নুর ওরফে মুকুল রহমান এবং দেগঙ্গার তৃণমূল নেতা আনিসুরকেও সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে ইডি। ঘটনাচক্রে, আলিফ হলেন আনিসুরের ভাই। চলতি সপ্তাহেই তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। ইডির তলব পেয়েই বৃহস্পতিবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন আনিসুর এবং আলিফ।
ইডির দফতরে ঢোকার সময় সাংবাদিকেরা আনিসুরকে প্রশ্ন করেন কী কী চাওয়া হয়েছে। তখন তিনি জানান, কিছু নথি চাওয়া হয়েছে। কী কী নথি চাওয়া হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি তিনি। এই মামলায় আদৌ কি যোগ ছিল? এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি কোনও বিজ়নেসের মধ্যে ছিলাম না। আমি পলিটিক্স করি। পলিটিক্স বুঝি।” তাঁকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বারিক বিশ্বাসের কথাও জিজ্ঞাসা করা হয়, কিন্তু এ সব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে কি কথা হত? এ প্রশ্নেরও উত্তর দেননি।
মঙ্গলবার ভোর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক চালকলে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তালিকায় ছিল দেগঙ্গায় মুকুলের বাড়ি এবং চালকল। পাশাপাশি, বারিকের রাজারহাটের ফ্ল্যাটেও হানা দিয়েছিল ইডি। তাঁর ফ্ল্যাটে মঙ্গলবার ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকেরা। রাতে বারিকের ফ্ল্যাট ছাড়ার সময় প্রায় ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে নিয়ে যান তাঁরা। শুধু বারিকের ফ্ল্যাটে নয়, একযোগে তাঁর চালকলেও হানা দিয়েছিল ইডি। ইডির দল যখন বারিকের বাড়ি এবং চালকলে তল্লাশি চালাচ্ছিল, তখন ইডির অন্য দল পৌঁছে যায় দেগঙ্গায়। বাকিবুরের আত্মীয় মুকুলের বাড়ি এবং চালকলে তল্লাশি চালায় তারা। প্রায় ২১ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান শেষে বাড়ি থেকে দু’টি মোবাইল তদন্তের কারণে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ ছাড়া বেশ কিছু নথিপত্র এবং ১৩ লক্ষ টাকাও বাজেয়াপ্ত করে তারা।
রেশন দুর্নীতি মামলায় আগেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। প্রাক্তন মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুরকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, বাকিবুরের ব্যবসায়িক কারবার অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হত দেগঙ্গা থেকে। মনে করা হচ্ছে সেই সূত্র ধরেই তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। তার পরই বারিক, মুকুল এবং আনিসুরকে ডেকে পাঠায় তারা।