রাস্তা আটকে, নিষেধ জানিেয় অনুষ্ঠান। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বাইশে শ্রাবণের বিশেষ উপাসনার পরে এ বার বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানেও আমজনতা থেকে সাংবাদিকদের জন্য ক্যামেরা বা মোবাইল নিয়ে ভিতরে প্রবেশের উপরে জারি হল নিষেধাজ্ঞা। সকলের জন্য সাদা পোশাকও ছিল বাধ্যতামূলক। অনুষ্ঠান চলাকালীন উপাসনা মন্দিরের সামনের রাস্তা আটকানো হয়েছিল ব্যারিকেড দিয়ে। সেখানেই ব্যানার টাঙিয়ে ছবি নিয়ে আপত্তির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। শান্তিনিকেতন থেকে শ্রীনিকেতন যাওয়ার প্রধান রাস্তা এ ভাবে অবরুদ্ধ থাকায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েন স্থানীয় মানুষেরাও।
প্রতি বছর বাইশে শ্রাবণ বিশেষ সমারোহে পালন করে বিশ্বভারতী। সকাল থেকে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবিস্মরণ এবং বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে নতুন প্রাণের আবাহন করা হয়। কলাভবন, পাঠভবন ও সঙ্গীতভবনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ থাকে এদিনের অনুষ্ঠানে। এই বছর করোনা সংক্রমণের আবহে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ কয়েক মাস। ছাত্র-ছাত্রীও প্রায় নেই বললেই চলে। সেই পরিস্থিতিতে বিনা আড়ম্বরেই পালিত হয় বিশেষ দিনটি। তবে, নিয়ম মেনেই হয়েছে সকালের বৈতালিক, উপাসনা এবং পরবর্তীতে বৃক্ষরোপণের অনুষ্ঠান।
কিন্তু, কোনও স্থানেই সংবাদমাধ্যমকে ছবি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বৃক্ষরোপণের মতো অনুষ্ঠানে এমন বিধিনিষেধে হতবাক আশ্রমিকদের অনেকে। প্রবীণ আশ্রমিক সুবোধ মিত্র বলেন, “রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন তাঁর মুক্তচিন্তার আদর্শ ছড়িয়ে পড়ুক সারা বিশ্বে। সংবাদমাধ্যমকে আটকে দিলে ছড়িয়ে পড়াও আটকে যাবে। করোনা আবহে মানুষের ভিড় আটকানোর তুলনায় মোবাইল আটকানোর মধ্যেও অন্য ইঙ্গিত স্পষ্ট।”
২০ জুলাই বিশ্বভারতীর তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, উপাসনা চলাকালীন মন্দিরে ক্যামেরা বা মোবাইল নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। পরবর্তীতে উপাসনার সময় ছাড়াও মন্দিরের বাইরে থেকে ছবি তুলতেও বাধা দেওয়া হয় বলে অনেকের অভিযোগ। আম্রকুঞ্জে বৃক্ষরোপণের অনুষ্ঠানেও সেই ধারা অক্ষুণ্ণ রইল। সব মিলিয়ে কবির প্রয়াণ দিবসেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না বিশ্বভারতীর।