Mountaineer

পাহাড়ে মৃতের দেহ ফিরল ঘরে

দুপুর ২টো নাগাদ উত্তরাখণ্ড থেকে কলকাতায় ফিরেছে অমিতের দেহ। বিমানবন্দরে ছিলেন অমিতের স্ত্রী কন্যাকুমারী এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৩২
Share:

স্বজনহারা: স্বামীর দেহের সামনে হাহাকার অমিতকুমার সাউয়ের স্ত্রীর। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

পাহাড়ই ছিল ভালবাসা। পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণ নিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরাখণ্ডে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই পাহাড়েই চিরবিদায় নিলেন রাজ্যের দুই বাসিন্দা, অমিতকুমার সাউ (৫২) এবং সন্দীপ সরকার (৩৯)। রাজ্যের আরেক বাসিন্দা সৌরভ বিশ্বাস এখনও নিখোঁজ। রাজ্যের যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সোমবার বলেন, ‘‘ব্যারাকপুর থেকে মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেও এক জন গিয়েছিলেন। তবে তিনি বেস ক্যাম্পে ছিলেন।’’

Advertisement

এ দিনই দুপুর ২টো নাগাদ উত্তরাখণ্ড থেকে কলকাতায় ফিরেছে অমিতের দেহ। বিমানবন্দরে ছিলেন অমিতের স্ত্রী কন্যাকুমারী এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেখান থেকে বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ মহেশতলার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেলেডাঙায় বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় অমিতের দেহ। বেসরকারি সংস্থার কর্মী অমিতের একটি আট বছরের ছেলে আছে। কন্যাকুমারী এ দিন বলেন, ‘‘রবিবার দুপুরে নিম (নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং) থেকে ফোন করে মৃত্যু সংবাদ দেয়। এর বেশি কিছু বলার অবস্থায় আমি নেই।’’ অমিতের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সুকান্ত বেরা-সহ বহু মানুষ। এ দিনই নুঙ্গি শ্মশানে অমিতের শেষকৃত্য হয়েছে।

উত্তরকাশীর নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং (নিম) সূত্রের খবর, সোমবার শনাক্ত করা হয়েছে নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সন্দীপের দেহ। এ দিনই তাঁর দেহ দেহরাদূনে এসে পৌঁছেছে। সন্দীপের স্ত্রী এবং এক ছেলে আছে। বাঁকুড়ার ওন্দার একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন সন্দীপ। তাঁর দাদা দেবদাস সরকার বলেন, ‘‘সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ নিম থেকে ফোন করে এই দুঃসংবাদ দেওয়া হয়। কাল, মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ পণ্যবাহী বিমানে সন্দীপের দেহ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছবে।’’

Advertisement

এ দিন অরূপ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমি বিমানবন্দরে ছিলাম। অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং দুঃখজনক ঘটনা। রাজ্য সরকার পরিবারগুলিকে সহযোগিতা করছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব উত্তরাখণ্ড সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে দুর্ঘটনায় কী ভাবে এত মানুষের প্রাণ গেল তা উত্তরাখণ্ড সরকারের তদন্ত করে দেখা উচিত।’’

উত্তরাখণ্ডে পর্বতারোহণ শিখতে গিয়েছিলেন নিম-এর অ্যাডভান্সড কোর্সের ২৭ জন শিক্ষানবিশ। ওই দলেই ছিলেন অমিত, সন্দীপ এবং সৌরভ। সঙ্গে ছিলেন ২ জন প্রশিক্ষক (ইনস্ট্রাক্টর)। গত ৪ অক্টোবর ‘দ্রৌপদী কা ডান্ডা-২’ শৃঙ্গে আরোহণের সময়ে প্রায় ৫২০০ মিটার উচ্চতায় তুষারধসের মুখে পড়ে দলটি। সেই খবর পেয়ে উদ্ধারে নামে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং ভারতীয় বায়ুসেনা। রবিবার পর্যন্ত ২ জন ইনস্ট্রাক্টর-সহ ২৭ জনের দেহ উদ্ধার করে নামিয়ে আনা হয়েছে। নিম সূত্রের খবর, এ দিন মোট পাঁচ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদেরই এক জন সন্দীপ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement