নার্সিং হস্টেলে ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ, উদ্ধার সইবিহীন ‘সুইসাইড নোট’ও

পুলিশের অনুমান, বিষ্ণুপুরের বনমালীপুর গ্রামের বাসিন্দা রিয়া আত্মহত্যা করেছেন। ঘর থেকে একটি সইবিহীন ‘সুইসাইড নোট’ও মেলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৫
Share:

রিয়া দে

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং হস্টেলে বাঁকুড়ার ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের খবর নজরে পড়েছিল তাঁর। সে ঘটনার দু’দিনের মাথায়, সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি নার্সিং ট্রেনিং স্কুলে ওড়নার ফাঁসে ঝুলন্ত দেহ মিলল বাঁকুড়ার আর এক ছাত্রী রিয়া দে-র (১৯)। পুলিশের অনুমান, বিষ্ণুপুরের বনমালীপুর গ্রামের বাসিন্দা রিয়া আত্মহত্যা করেছেন। ঘর থেকে একটি সইবিহীন ‘সুইসাইড নোট’ও মেলে। যদিও আত্মহত্যার কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ, সহপাঠী, পরিবার। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “কমিটি গড়া হয়েছে। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে।’’

Advertisement

সোমবার ক্লাসে ‘অগজ়িলিয়ারি নার্সিং মিডওয়াইফারি’ (এনএনএম)-র ছাত্রী রিয়াকে না দেখে খোঁজ শুরু করেন তাঁর ‘রুমমেটরা’। তাঁদের দাবি, সকালে পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘর থেকে বেরোনোর সময় রিয়া তাঁদের বলেন, ‘‘তোরা চল, আমি আসছি।’’ ঘণ্টাখানেক পরেও রিয়া না আসায় দুপুর ১টা নাগাদ তাঁরা হস্টেলে ফিরে দেখেন, ঘরের দরজা বন্ধ। খবর যায় হস্টেল কর্তৃপক্ষ,পুলিশের কাছে।

পুলিশের দাবি, যে ‘সুইসাইড নোট’ মিলেছে তাতে লেখা রয়েছে, ‘এক দিন নার্স হয়ে পরিবার-সহ সব মানুষের সেবা করব ভেবেছিলাম, সেটা হল না... এ ভাবে বাঁচতে পারব না। কেন যে সে দিন আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হল জানি না। হস্টেলে আমার কিছুই ঠিক হচ্ছিল না’। যদিও কোন সিদ্ধান্তের কথা বলতে চাওয়া হয়েছে বা রিয়া কী নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন, তা জানাতে পারেনি তাঁর পরিবার। মৃতার এক খুড়তুতো দিদির দাবি, “বর্ধমানের মহিলা কলেজে ভূগোলে অনার্সে ভর্তি হয়েছিল রিয়া। সেটা ছেড়ে এএনএমে ভর্তি হয়। জিএনএম (‌জেনারেল নার্সিং মিডওয়াইফারি) কোর্সেও ভর্তির সুযোগ পায়। নার্সিংয়ের দু’টি কোর্সের মধ্যে কোনটা পড়বে, এ নিয়ে হয়তো ভাবছিল ও। তা বলে এ রকম করবে বুঝিনি।’’ রিয়ার বাবা নিরঞ্জন দে-ও বলেন, “পড়ার ব্যাপারে মেয়ের ইচ্ছাই শেষ কথা ছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সোমবার রাতেও ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। কী হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: স্বামী-হত্যায় ১৬ বছর পরে সাজা মকুব বৃদ্ধার

পরিবারের দাবি, মিশুকে মেয়েটি বরাবর পড়াশোনায় ভাল ছিলেন। উচ্চমাধ্যমিকে ৮৯%-র বেশি নম্বর পান। বিষ্ণুপুরের রিয়ার এক সহপাঠী ‘জিএনএম নার্সিং’-এ সুযোগ পেয়ে কলকাতায় পড়ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘রিয়ার সঙ্গে কথায় মনে হয়নি, যা পড়ছে তা নিয়ে ওর খেদ রয়েছে।’’ রিয়ার জেঠতুতো দাদা মনসারাম দে জানান, ন্যাশনাল মেডিক্যালের বাঁকুড়ার নার্সিং ছাত্রী সমাপ্তি রুইদাসের মৃত্যুর ঘটনা রিয়ার নজরে পড়ে। তাঁর দাবি, ‘‘ও বলেছিল, ‘দেখেছ, নার্সিং পড়তে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে’। কিন্তু ওই ঘটনায় প্রভাবিত হয়েছে বলে মনে হয়নি।’’ বর্ধমানের নার্সিং স্কুলের প্রধান রিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মেয়েটি পড়াশোনায় ভাল ছিল। সমস্যা রয়েছে বলে জানতাম না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement