হাহাকার: দুই যুবকের দেহ নিয়ে পুরুলিয়ার দুমদুমি গ্রামে এল অ্যাম্বুল্যান্স। সোমবার। ছবি: সুজিত মাহাতো
পুরুলিয়ায় ফিরল উত্তরপ্রদেশের পথ দুর্ঘটনায় মৃত ছ’জন শ্রমিকের দেহ। সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে দু’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুল্যান্সে দেহগুলি এসে পৌঁছয়। সেখান থেকে আলাদা তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সে দেহ পাঠানো হয় মৃতদের গ্রামে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের মুঘলসরাইয়ের নির্দিষ্ট জায়গায় আগে থেকেই পৌঁছে অপেক্ষা করা হচ্ছিল। সেখান থেকে ছ’টি দেহ এবং তিন জন আহত শ্রমিককে নিয়ে আসা হয়েছে। সোমবার দেহগুলি গ্রামে পাঠানো হয়।’’ তিনটি গ্রামেই মোতায়েন ছিল পুলিশ।
এ দিন পুরুলিয়া মফস্সল থানার দুমদুমি গ্রামে মিলন বাদ্যকর এবং চন্দন রাজোয়াড়ের দেহ পৌঁছতে উপচে পড়ে ভিড়। সামাজিক দূরত্ব যাতে বজায় রাখতে গিয়ে হিমসিম খেতে হয় পুলিশ ও সিভিক এবং ভলান্টিয়ারদের। মিলনের বাড়ির কয়েকশো মিটার দূরে গিয়ে দাঁড়ায় অ্যাম্বুল্যান্স। সেখানেই যান পরিজনেরা। চন্দনের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাড়িতে।
ওই দুই যুবকের সঙ্গে রাজস্থানের একই মার্বেল কারখানায় কাজ করতেন দুমদুমি গ্রামের মিঠুন কর্মকার। কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে, কিছু পথ ট্রাকে চড়ে কয়েকদিন আগে গ্রামে ফিরেছেন তিনি। মিঠুন বলেন, ‘‘ওখানে মালিক বকেয়া টাকা দিতে চাইছিল না। আমি না নিয়েই বেরিয়ে এসেছিলাম। ওরা অপেক্ষা করে গিয়েছিল।’’ মিঠুন জানান, চন্দন প্রায়ই বলতেন, ‘‘এ বার ফিরে গ্রামে দোকান দেব। আর রাজস্থানে যাব না।’’
অজিত মাহাতো, ধীরেন মাহাতো এবং স্বপন রাজোয়াড়ের দেহ এ দিন কোটশিলার উপরবাটরি গ্রামে যায়নি। পরিজনেরা এবং গ্রামের লোকজন গিয়েছিলেন জয়পুর এবং আড়শা ব্লকের সীমানায় কংসাবতী নদীর তীরের দেউলঘাটা শ্মশানে। সেখানেই সৎকার করা হয়। মৃত গণেশ রাজোয়াড়ের দেহ যায় পুরুলিয়ার জয়পুর থানার ঝালমামড়া গ্রামের বাড়িতে। গ্রামের অদূরে একটি শ্মশানে সৎকার করা হয়।
এ দিন জেলায় ফিরেছেন উত্তরপ্রদেশের ওই দুর্ঘটনায় আহত তিন শ্রমিকও। তাঁদের মধ্যে পুরুলিয়া মফস্সল থানার বোঙাবাড়ি গ্রামের শিবু কর্মকার এবং পাড়ার ভাঁওরিডি গ্রামের কৈলাস মাহাতোর চিকিৎসা চলছে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। কোটশিলার উপরবাটরি গ্রামের গোপাল মাহাতোকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে।