ভিড়ে ঠাসা স্পেশাল ট্রেন। নিজস্ব চিত্র।
অতিমারির কারণে গত কয়েক মাস ধরেই স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে রেল। শহরতলির একমাত্র লাইফলাইন এই লোকাল ট্রেন। কিন্তু সেই পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়ায় চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বহু যাত্রীকে।
পেটের টানে অনেককেই কলকাতা ছুটে আসতে হয়। ফলে রেলের বিশেষ ট্রেনগুলোতে উপচে পড়ছে ভিড়। ট্রেনের সংখ্যা কম থাকায় এক একটি ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা থাকছে না। নিত্য দিন একই ছবি উঠে আসছে অফিসের সময়। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার যাত্রীদের অভিজ্ঞতা আরও ভয়াবহ। স্বাভাবিক সময় ওই শাখায় ট্রেনগুলিতে ঠাসাঠাসি ভিড় থাকে। ট্রেন কম চলায় সেই পরিস্থিতি এখন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বলে দাবি ওই শাখার নিত্যযাত্রীদের।
তাঁদের অভিযোগ, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে ভাবে ঝুলতে ঝুলতে যেতে হচ্ছে, তাতে যে কোনও দিন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন যে কেউ। হাবড়ার যাত্রী তোতন বসাকের কথায়, “অশোকনগর, দত্তপুকুর থেকে যে ভাবে ভিড়ের স্রোত আসে, তাতে প্রায় কোমর ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়।” অন্য দিকে হৃদয়পুরের বাসিন্দা শ্যামলেন্দু চৌধুরী বলেন, “বয়স হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ভাবে কতদিন চলতে পারব জানি না। নিজেদের কাজ টিকিয়ে রাখার জন্য এই ভিড় ঠেলে আমাদের ট্রেনে উঠতে হচ্ছে।”
যাত্রীদের অধিকাংশের মধ্যেই একটা ক্ষোভ ধরা পড়েছে। তাঁদের অভিযোগ, শপিং মল, সিনেমা হল খুলে দেওয়া হচ্ছে। বাসও চলছে। তবে ট্রেন কেন চালানো হচ্ছে না। এক যাত্রীর কথায়, “শহরে যাওয়ার একমাত্র লাইফলাইন এই ট্রেন। সেই ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে অনেকে কাজে যেতে পারছেন না। দিনআনা দিন খাওয়া বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন।” যাত্রীদের দাবি, অবলিম্বে ট্রেন চালু করা হোক। বারাসাতের বাসিন্দা নূপুর দত্ত বলেন, “হয় সব কিছু বন্ধ করে দিক নতুবা ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করুক। এ ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে চলা যায় না।” ইতিমধ্যেই ট্রেন বাড়ানোর দাবিতে দত্তপুকুর স্টেশনে অবরোধ করেছেন নিত্য যাত্রীরা।