—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিধাননগর স্টেশনে রেল অবরোধের জেরে শুক্রবারই ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছিল শিয়ালদহ মেন শাখায়। শনিবারও সেই পরিষেবা স্বাভাবিক হল না। নিত্যযাত্রীদের অবশ্য বক্তব্য, শিয়ালদহ মেন শাখায় ট্রেনের সমস্যা এক-দু’দিনের নয়। বরং তাঁদের অভিযোগ, নিত্যদিনই অফিসের ব্যস্ত সময়ে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ঢুকছে ট্রেন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে। রেলের অবশ্য বক্তব্য, কোনও কোনও জায়গায় সময় মতো লেভেল ক্রসিং বন্ধ করা যাচ্ছে না। ফলে পর পর দাঁড়িয়ে পড়ছে ট্রেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
নিত্যদিনের ভোগান্তি নিয়ে জনৈক নিত্যযাত্রী শৌভিক সেনগুপ্ত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “সময়ে ট্রেন আসছে না। ব্যস্ত সময়ে হঠাৎ করে লোকাল ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। ভিড়ে ঠাসা কামরায় ঝুলতে ঝুলতে অফিস যেতে হচ্ছে। তা-ও হাতে সময় নিয়ে বেরিয়েও ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছি না।” আর এক নিত্যযাত্রী সপ্তর্ষি দাসের কথায়, “পথে এত বার ট্রেন থামছে যে, ব্যারাকপুর থেকে খড়দহ পর্যন্ত আসতেই প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে এই ভোগান্তি চলছে।” তাঁর খেদোক্তি, “রেল সব দেখেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিধাননগর স্টেশনের কাছে রেল লাইনের উপরে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী। তাঁদের অভিযোগ, একই প্লার্টফর্মে পর পর তিনটি ট্রেন আসছে বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয়। ফলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। সরু প্ল্যাটফর্ম এবং সাবওয়েতে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। অবরোধের জেরে পর পর দাঁড়িয়ে যায় দত্তপুকুর লোকাল, বনগাঁ লোকাল-সহ একাধিক ট্রেন। অফিসফেরত যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। শুক্রবারের এই ঘটনা এবং ট্রেন দেরিতে চলা নিয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগোযাগ করে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের সঙ্গে।
কৌশিক বলেন, “অবরোধ কোনও সমাধান নয়। কোনও ক্ষোভ থাকলে যাত্রীরা তা নির্দিষ্ট মাধ্যমে জানাতে পারেন। রেল পদক্ষেপ করবে।” রেলের জায়গা জবরদখলের কারণে অনেক স্টেশনে যাত্রীদের যাতায়াতের পথ সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, “জবরদখল সরানোর জন্য আমরাও এ বার অভিযানে নামব।” ট্রেন দেরিতে চলা এবং যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ে তিনি বলেন, “কোনও কোনও জায়গায় সঠিক সময়ে লেভেল ক্রসিং বন্ধ করা যাচ্ছে না। ফলে পর পর ট্রেন দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। সে কারণেই হয়তো এই সমস্যা। তবে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।”