শিয়ালদহ স্টেশনে চলছে সাফাইয়ের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
বনগাঁ এবং রানাঘাটের শেষ ট্রেন ছাড়বে শিয়ালদহ থেকে। আর সেই সময়েই প্ল্যাটফর্মগুলিতে চলে সাফাইয়ের কাজ। জল ছড়িয়ে প্ল্যাটফর্ম ধোয়া, মোছার ফলে ট্রেন ধরতে যাওয়া যাত্রীদের বিস্তর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, ধোয়া-মোছার জন্য যে পরিমাণ জল ছড়ানো হয়, তাতে ভেসে যায় প্ল্যাটফর্ম। তার মধ্যেই দৌড়ে বা জোর পায়ে হেঁটে ট্রেন ধরতে গিয়ে প্রায় প্রতি দিনই একাধিক যাত্রীর পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় পিছলে গিয়ে। অনেকে পড়ে গিয়ে চোট পান বলেও অভিযোগ। যাত্রীদের প্রশ্ন, কেন শেষ ট্রেন চলে যাওয়ার পর ওই সাফাইয়ের কাজ করা হয় না? রেলের জবাব, তেমনটাই তো হওয়ার কথা। কেন হচ্ছে না খতিয়ে দেখা হবে।
রাত ১১টা ৫০ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে যায় দিনের শেষ আপ রানাঘাট লোকাল। একই সময়ে ছাড়ে আপ বনগাঁ লোকালও। ১২ বগির ট্রেন দেওয়া হলে শিয়ালদহ স্টেশনের নির্দিষ্ট কিছু প্ল্যাটফর্মেই ঢোকে দিনের শেষ লোকাল ট্রেনগুলি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডাউন লালগোলা প্যাসেঞ্জারকে শেষ আপ রানাঘাট লোকাল হিসাবে পাঠানো হয়। ১, ৬ কিংবা ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনগুলি। যাত্রীদের অভিযোগ, প্ল্যাটফর্মে ওঠার মুখেই জলে জলাকার থাকে। স্টেশনের মূল প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যেতে অনেকখানি রাস্তা পেরোতে হয়। অভিযোগ সেই পথও জলের কারণে পিছল থাকে।
অথচ শেষ ট্রেন চলে যাওয়ার পর প্রথম ট্রেন ছাড়ে সেই সওয়া তিনটেয়। মাঝে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বিরতি। যাত্রীদের প্রশ্ন, ওই সময়ে কেন সাফাইয়ের কাজ করা হয় না? পিছল পথে ট্রেন ধরতে গিয়ে অনেক যাত্রী পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁদের। শ্যামনগরের বাসিন্দা অরবিন্দ সেন ফেরেন শেষ রানাঘাট লোকালে। প্রায়ই দিনই তিনি দৌড়ে ট্রেন ধরেন। কারণ, অত রাতে ধর্মতলা থেকে ফেরার প্রায় কিছুই পান না। বেশির ভাগ দিন শেয়ার ট্যাক্সিতে আসেন। ফলে শেষ মুহূর্তে ট্রেন ধরেন। তাঁর কথায়, ‘‘এত জল থাকে যে কী বলব। সাফাইকর্মীদের এই নিয়ে কিছু বলতে গেলে ওঁরা বলেন, তাঁদের কাজ করতে বলা হয়েছে। তাই তাঁরা কাজ করছেন। প্রায় রোজই এক-দু’জন করে আছাড়ও খান। কিন্তু কী করবেন? শেষ ট্রেন তো ধরতেই হবে!’’
এ ব্যাপারে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ এর আগে কেউ করেননি। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। তবে সাফাইয়ের কাজ শেষ ট্রেন চলে যাওয়ার পর শাটার নামিয়েই করার কথা। যদি তার আগে হয়ে থাকে, তা হলে সেটা নিশ্চিত বন্ধ করতে বলা হবে।’’