—নিজস্ব চিত্র।
সঙ্গে ইউনিয়ন আছে। অর্থাৎ কোমরের জোরের নাম ইউনিয়ন, ইউনিয়ন এবং ইউনিয়ন!
তাই ‘নেতা-মন্ত্রী চিনি না’ বলে তাঁদের ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে যেমন ইচ্ছে ভাড়া নেওয়া এবং গান বাজানো চলছে এবং চলবে বলে কয়েক দিন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন অটোর এক শ্রেণির মালিক-চালক।
অটো-দৌরাত্ম্যের রাশ টেনে ধরতে ইউনিয়ন অবশেষে কিছু নিয়মবিধি ঘোষণা করল রবিবার।
কিন্তু সেই বিধিকে ফুঁয়ে উড়িয়ে অটোর মালিক-চালকেরাই বুঝিয়ে দিলেন, ওই ইউনিয়ন-টিউনিয়ন, নীতিটিতির তোয়াক্কা করেন না তাঁরা। তোয়াক্কা যে করেন না, এ দিনের কর্মশালা থেকে ফিরেই কাটা ট্রিপ, ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকানো, কান-মাথা ঝালাপালা করা বাজনা আর এলইডি আলো জ্বালিয়ে দুরন্ত দৌড়ে সেটা বুঝিয়েও দিল হাজারো অটোরিকশা।
পরিবহণমন্ত্রীর তোয়াক্কা করে না অটো। ইউনিয়নকে ফুঁয়ে উড়িয়ে দেয় অটো। তা হলে অটোর নিয়ন্ত্রক কে বা কারা? নাকি কেউ আদৌ নেই? অটো-অপদেবতারা কি তা হলে স্বয়ম্ভু?
জবাব কে দেবে, সেটা আরও বড় প্রশ্ন। নবান্ন-কর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, আসলে পুজোর আগে অটো নিয়ে জলঘোলা চাইছেন না খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। তাই অটোর বেয়াড়াপনা ঠেকানোর উদ্যোগ তেমন দেখা যাচ্ছে না। আর অনেক অটো যে ইউনিয়নকে অবজ্ঞা করছে, তার কারণটা বেআব্রু করে দিচ্ছেন কিছু ইউনিয়ন নেতাই। তাঁরা প্রকাশ্যেই কবুল করছেন, অটোর উপরে তাঁদের কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই। তাই দৌরাত্ম্য অবাধ!
তারই মধ্যে শাসক দলের ইউনিয়নের নেতাদের পক্ষ থেকে এ দিন রীতিমতো কর্মশালার আয়োজন করে অটোচালকদের সামনে ১১ দফা নির্দেশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তার মধ্যে আছে: l স্ট্যান্ড থেকে স্ট্যান্ড ভাড়া খাটতে হবে। l কোনও কাটা বা ব্রেক ট্রিপ চলবে না। l অটোর ভিতরে-বাইরে এলইডি লাইট বা সাউন্ড সিস্টেম লাগানো যাবে না ইত্যাদি।
মন্ত্রীকে অবজ্ঞা করতে গিয়ে ইউনিয়নের ছাতা দেখিয়েছিল অটো। ইউনিয়ন যখন নিয়ম দেখাল, অটো তাদেরও দেখাল বুড়ো আঙুল! কর্মশালা শেষ হতে না-হতেই বেপরোয়া দৌড় আর ইচ্ছেমতো ভাড়া নেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে এক শ্রেণির অটো বুঝিয়ে দিল, অন্য কেউ নয়। তারাই রাজা তাদের রাজত্বে!