ইয়াসের হাত থেকে বাঁচাতে এ ভাবেই দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হচ্ছে বাড়ির চালা। নিজস্ব চিত্র।
বছর ঘুরতে চললেও আমপানের স্মৃতি এখনও ফিকে হয়ে যায়নি। চোখের সামনে নিজেদের ঘরবাড়ির চালা খেলনার মতো উড়ে যেতে দেখেছিলেন তাঁরা। ২০২০-র মে মাসেই আমপান আছড়ে পড়েছিল এ রাজ্যে। এক বছর পেরিয়ে আবারও সেই মে-তেই চোখ রাঙাচ্ছে আরও এক ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তাই এ বার আর কোনও ঝুঁকিই নিতে চাইছেন না দিঘার উপকূলবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। ইয়াস আছড়ে পড়ার আগেই ঘরবাড়ির চালা শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
কিন্তু যে গতিতে ঝড় আসছে তাতে দড়ি দিয়ে চালার বাঁধন টিকবে কি না তা নিয়ে সংশয়ও তৈরি হলেও তড়িঘড়ি নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই বাঁচাতে লেগে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। যাঁদের টালির চাল তাঁরা উপরে অতিরিক্ত টিন চাপিয়ে দড়ি বেঁধে দিয়েছেন। যাঁদের খড়ের চাল, তাঁরা ত্রিপল এনে তা চাপিয়েছেন চালার ওপর। অ্যাসবেস্টসের ছাউনিগুলো আবার কাঠের বাটাম আর দড়ি দিয়ে বাঁধা। দিঘা-সহ উপকূলবর্তী গ্রামগুলোতে একই ছবি ধরা পড়েছে।
কাঁথি ১ ব্লকের রসুলপুর, ভুঁইয়াপাদা, বগুরান, রামচন্দ্রপুর সর্বত্রই ধরা পড়ছে এক ছবি। বগুরান জলপাইয়ের বাসিন্দা দেবব্রত খুটিয়া জানান, “আমপানে বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে সরকারি ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমার মতো অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে।” এর পরই তিনি বলেন, “ঝড়ের হাত থেকে বাড়ির চালা বাঁচাতে তাই এ বার সেগুলোকে শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছি। এ বার ঝড়ে যদি চালাঘর বাঁচাতে পারি তা হলে কিছুটা হলেও ক্ষতি কম হবে।” এই ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে দিঘার উপকূলবর্তী গ্রামগুলোতে। সে ধারণার বশবর্তী হয়েই গ্রামে গ্রামে চালাঘর দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলার কাজ সারা হয়ে গিয়েছে।