প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ভ্রুকুটি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রামবাসীদের মধ্যে। গত কয়েক দিনে লাগাতার করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় অপরিচিতদের সংসর্গ থেকে দূরে থাকতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু তারই মাঝে ইয়াসের আতঙ্কে কাঁচা, ঝুপড়ি বা টালি-খড়-টিন-অ্যাসবেস্টস বসানো বাড়িতে থাকতেও ভয় পাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনও তৎপরতার সঙ্গে কাজ চালাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে। বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা বাড়িগুলি থেকে দ্রুত বাসিন্দাদের সরিয়ে এনে অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত রিলিফ বা ফ্লাড সেন্টারে রাখার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনা আবহে লোকজনকে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া বেশ ধাক্কা খাচ্ছে বলেই জানিয়েছেন রামনগর ২ ব্লকের দেপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনুপ কুমার মাইতি।
অনুপ জানান, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটের মাঝেও কোভিড সতর্কতা ভুললে চলবে না। এই বিষয়ে রাজ্য সরকার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। সেই কারণে ত্রাণ শিবিরে আনার আগেই প্রত্যেক গ্রামবাসীর থার্মাল স্ক্যান করে শরীরের উত্তাপ পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি ব্লক প্রশাসনের কাছে থাকা কোভিড আক্রান্তের তালিকাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। যাঁদের কোভিড রয়েছে বা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে, তাঁদের অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে এতেও অনেক গ্রামবাসী ত্রাণ শিবিরে আসতে ভয় পাচ্ছেন। তাই সে ক্ষেত্রে কেউ যদি নিজের ব্যবস্থায় আত্মীয় বা পরিচিতদের পাকা বাড়িতে সুরক্ষিত স্থানে চলে যেতে চান, তাঁদের সেই সুযোগও করে দেওয়া হচ্ছে। বাকি গ্রামবাসীকে ত্রাণ শিবিরের সুরক্ষার দিকটি ভাল ভাবে বুঝিয়ে বাড়ি থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনুপ।
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে রামনগর ২ ব্লকের প্রায় ১০ হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আনা হয়েছে। ধাপে ধাপে সবাইকেই সুরক্ষিত স্থানে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। শিবিরে আসা লোকেদের জন্য সকাল ও সন্ধ্যায় শুকনো খাবার চিঁড়া, মুড়ি প্রভৃতি দেওয়া হচ্ছে। দুপুরে ও রাত্রে ভাত, তরকারি দেওয়া হচ্ছে। ঝড়ের মোকাবিলায় সকলেই প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।