পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হোটেলগুলি পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। —নিজস্ব চিত্র।
ইয়াসের বিপর্যয় চাক্ষুষ করতে রোমাঞ্চসন্ধানীদের অনেকেই ভিড় করতে পারেন দিঘা, মন্দারমণি বা তাজপুরের হোটেলে। তবে এমন রোমাঞ্চসন্ধানীদের গোপনে হোটেলে থাকতে দিলে বাতিল করা হবে লাইসেন্স। মঙ্গলবার এই মর্মে কড়া নির্দেশ জারি করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের স্পষ্ট নির্দেশ, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কোনও বিপর্যয় হলে তা প্রাণহানির কারণ হতে পারে। ফলে ইয়াস আছড়ে পড়ার সময় দিঘা-সহ সমুদ্র তীরবর্তী কোনও হোটেলে পর্যটক রাখা যাবে না।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা, ইয়াস আছড়ে পড়ার সময় দিঘা-মন্দারমণি-তাজপুরে সমুদ্র চূড়ান্ত উত্তাল হয়ে উঠবে। বিশালাকায় ঢেউ আছড়ে পড়বে সমুদ্রের পাড়ে। প্রশাসনের আশঙ্কা, এমন ভয়ঙ্কর দৃশ্য চাক্ষুষ করতে এক দল উৎসাহী দিঘা, মন্দারমণি বা তাজপুর-সহ সমুদ্রের আশপাশের হোটেলে গিয়ে উঠতে পারেন। তবে সেই রোমাঞ্চের অনুভুতি পেতে গিয়ে জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই সেখানকার হোটেল কর্তৃপক্ষগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছে প্রশাসন। জেলাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের সময় সকলের প্রাণ বাঁচানোর আমাদের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ বিপদের মাঝেও নিছকই উৎসাহের বশে হোটেলে এসে চুপিসাড়ে থাকার চেষ্টা করতে পারেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে একাধিক হোটেলকর্মীও এই বিপর্যয়ের মাঝে হোটেলে থেকে বিপদ ডেকে আনতে পারেন। সে কারণেই জেলা প্রশাসনের তরফে এমন কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ইয়াস আছড়ে পড়ার আগেই হোটেলকর্মী ও পর্যটকদের দিঘা-সহ জেলার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার হোটেলগুলি ছাড়ার নির্দেশ জারি করেছে জেলা প্রশাসন। এই নতুন নির্দেশ কার্যকর করতে সক্রিয় দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এমনিতেই করোনার আবহে গত প্রায় দু’তিন মাস হোটেলগুলি পর্যটকশূন্য। সম্প্রতি লকডাউনের জেরে হোটেলগুলি একেবারেই বন্ধ হয়ে রয়েছে। এই মুহূর্তে ইয়াসের বিপর্যয় এড়াতে প্রশাসন যে নির্দেশ দিয়েছে, তা সকলকে মেনে চলতে বলা হচ্ছে। ঝড়ে কারও যেন ক্ষতি না হয়, তা লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে।”