জল ঢুকেছে কাকদ্বীপ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। ছবি: পিটিআই।
ইয়াসের জেরে ভাসছে কাকদ্বীপ, সাগর-সহ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। জলমগ্ন কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, সাগরদ্বীপ, বকখালি ছাড়াও জেলার বহু গ্রাম। এ ছাড়া, সুন্দরবনের উপকূল এলাকায় বাঁধ উপচে নোনা জলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকালে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর ইয়াসের প্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সমুদ্রের জলস্তর। মুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ ভেঙে সকাল থেকেই হুড়মুড়িয়ে জল ঢুকতে শুরু করেছে জেলায়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কাকদ্বীপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন। সেখান থেকে গ্রামবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। কাকদ্বীপ হাসপাতালের সামনেও প্রায় এক হাঁটু জল। জল ঢুকেছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডেও। যার জেরে বহু রোগীর আত্মীয়পরিজন রীতিমতো আতঙ্কিত। তবে চিকিৎসাধীন রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত ব্যবস্থা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
কাকদ্বীপের মতোই জলমগ্ন সাগর। সাগরের কচুবেড়িয়া, সাউঘেরি, বাস স্ট্যান্ড এলাকা জলে ডুবেছে। ওই জায়গাগুলিতে বেহাল নিকাশির কারণেই এ অবস্থা বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, বুধবার পূর্ণিমা তিথি হওয়ায় ভরা কোটাল। সেই সঙ্গে রয়েছে চন্দ্রগ্রহণ। পাশাপাশি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কয়েক জায়গায় গ্রামের মধ্যে জল ঢুকে পড়ছে। যদিও স্থানীয়দের পাল্টা দাবি, সাগরে বহু গ্রামই জলমগ্ন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই গ্রামের মানুষজনকে বিভিন্ন ফ্লা়ড সেন্টারে রাখা হয়েছে। যে সমস্ত গ্রামে জল ঢুকেছে, সেখানকার বাসিন্দাদের দ্রুত উদ্ধারের কাজও শুরু করেছে প্রশাসন।
জলমগ্ন কাকদ্বীপ। —নিজস্ব চিত্র।
বুধবার সকাল থেকে সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের ফ্রেজারগঞ্জ এবং বকখালির বিস্তীর্ণ এলাকার বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছে বহু গ্রাম। স্রোতের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বকখালির সমুদ্র সৈকত। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে বাঁধ মেরামতি শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে বাসিন্দাদের। ফ্রেজারগঞ্জের অমরাবতী, লক্ষ্মীপুর, হাতি কর্নার, দাস কর্নার, পাত্রপাড়া-চৌরাস্তা এবং ফ্রেজার সাহেবের বাংলোলাগায়া এলাকা দুপুর পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। তবে ধীরে ধীরে জল নামতে শুরু করেছে। যদিও ওই এলাকাগুলিতে বেশ কয়েকটি মাটির বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এমনকি, ফ্রেজারগঞ্জের বিখ্যাত ফ্রেজার সাহেবের বাংলোর যেটুকু অবশিষ্ট ছিল, তার একাংশও ভেঙে যায়। অন্য দিকে, বকখালির মূল পর্যটনকেন্দ্র ঝাউবন, কালিস্তানও প্লাবিত হয়েছে।