পথ হারানোর পথ: শনিবার রাতের পূর্বাভাস অনুযায়ী। ওড়িশার পরে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত। তাই আর গতিপথের বর্ণনা দেয়নি মৌসম ভবন।
নিজের নামের মান রাখল জ়ওয়াদ। আরবি ভাষায়, এর অর্থ ‘উদার’। অনেকেই বলছেন, কার্যত ‘উদারতা’ দেখিয়েই বঙ্গোপসাগরের উপরেই শক্তি খুইয়ে এ যাত্রায় বঙ্গকে প্রবল দুর্যোগ থেকে রেহাই দিল সে! আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার থেকেই শক্তি খোয়াতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় জ়ওয়াদ। সন্ধ্যায় ওড়িশার কাছাকাছি পৌঁছে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে সে এবং ওড়িশা পেরিয়ে বঙ্গের উপকূলে পৌঁছতে পৌঁছতে সে শক্তি হারিয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপের চেহারা নেবে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানান, পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও আশঙ্কা নেই। তবে গাঙ্গেয় বঙ্গে দিন দুয়েক বৃষ্টি মিলতে পারে। আজ, রবিবার উপকূলে ঘণ্টায় ৩৫-৪৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে। হাওয়ার সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ, রবিবার এবং আগামিকাল, সোমবার গাঙ্গেয় বঙ্গের সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। আজ, রবিবার দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়ার দু’এক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতা, হুগলি, বীরভূম, বাঁকুড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং দুই বর্ধমানের দু’-এক জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামিকাল, সোমবার দুই ২৪ পরগনা এবং নদিয়া, মুর্শিদাবাদের দু’-এক জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় দানা বাঁধার পূর্বাভাস মেলার পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে সাগরের উপরেই যে সে নিস্তেজ হবে তা ভাবতে পারেননি অনেকেই। কেন এ ভাবে শক্তি খোয়াল জ়ওয়াদ? কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এর পিছনে মূলত দু’টি কারণকে দায়ী করছেন। তিনি জানান, বায়ুমণ্ডলের দু’টি স্তরের মধ্যে বায়ুপ্রবাহের গতির ফারাক বেশি রয়েছে। এর ফলে ঘূর্ণিঝড়টি তীব্রতা বাড়াতে পারেনি। বরং দুর্বল হয়েছে। বায়ুপ্রবাহের গতির ফারাকের পাশাপাশি সমুদ্রজলের তাপমাত্রার ফারাকও অন্যতম কারণ। গোকুলবাবু বলেন, ‘‘পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের তুলনায় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তাপমাত্রা কম। তাই ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার দিকে বাঁক নেওয়ার পর (উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর) তাই কম উষ্ণতার কারণে শক্তি খুইয়েছে।’’