প্রতীকী ছবি।
আমপানে গ্রামীণ হাওড়ায় ভেঙে পড়া গাছের সংখ্যা মাত্র ২৪২!
উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন দাবি ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরেই। কারণ, প্রশাসনের আধিকারিকদের বড় একটি অংশ মনে করছেন, সে রাতে ভেঙে পড়া গাছের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। সেই তথ্য এখনও মেলেনি। প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে বহু গাছ রাতারাতি কেটে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন স্থানীয় লোকজন।
ওই ঘূর্ণিঝড়ের পরের দিন গ্রামীণ এলাকার প্রায় সব রাস্তাই ভেঙে পড়া গাছের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। বহু জায়গাতেই গাছ কেটে রাস্তা সাফ করতে নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই সব কাটা গাছ কতটা প্রশাসনের কাছে ফিরেছে, সে প্রশ্ন উঠছেই।
নিয়মমতো রাস্তায় ভেঙে পড়া গাছ নিলাম করে সরকার আয় করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার পরিমাণ অনেক কম হবে বলে মনে করছেন অনেকে। ইতিমধ্যে অনেক সাধারণ মানুষ ভেঙে পড়া গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সরকারি কর্তাদের একাংশ। মহকুমাশাসক (উলুবেড়িয়া) অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর এসেছে, উলুবেড়িয়া পুর এলাকায় ২৩০টি এবং গ্রামাঞ্চলে ১২টি গাছ ঝড়ে পড়েছিল। সেগুলি উদ্ধার করা হয়েছে।’’ প্রশাসনকে না-জানিয়ে ভেঙে পড়া গাছ বিক্রি করা হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নে মহকুমাশাসকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেটাই জানিয়েছি। এর বেশি কিছু নেই।’’ জেলা বনাধিকারিক রাজু সরকার বলেন, ‘‘সে দিন কত গাছ পড়েছিল, সেই তথ্য জেলাশাসকের দফতরে থাকে। এটা আমাদের কাজ নয়। বন দফতরের জমিতে যে গাছগুলি পড়েছিল, তার তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।’’
মহকুমা পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, আমপানের সময়ে লকডাউন জারি ছিল। ফলে, বহু সরকারি দফতর বন্ধ ছিল। নজরদারি ঠিক মতো চালানো যায়নি। তাই কোথায় কত গাছ ভেঙে পড়ে, তার সঠিক তথ্য এখন আর পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ খবরও এসেছে যে, এমন অনেক গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে, যে গুলির একটি বা দু’টি ডাল ভেঙেছিল। গাছগুলি কাটার কোনও প্রয়োজন ছিল না।’’
পাশের জেলা হুগলিতে অবশ্য প্রায় ৭০ হাজার গাছ ভেঙে পড়েছিল বলে দাবি জেলা প্রশাসনের। এখানেও সব গাছ উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। নিলামও শুরু হয়নি। তবে, প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ গাছ কেটে নিজেরাই বিক্রি করেছেন, এ আশঙ্কাও রয়েছে প্রশাসনের।