Cyclone Amphan

আমপান দুর্নীতি: বিক্ষোভে ‘লাঠিচার্জ’, আক্রান্ত পুলিশ

পটাশপুর-২ ব্লকে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাউয়ের বিরুদ্ধে রেশন সামগ্রী বিলি এবং আমপান ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটাশপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৯
Share:

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশি পদক্ষেপ। শুক্রবার পটাশপুরে। নিজস্ব চিত্র

আমপান-দুর্নীতিতে শাসক দলের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে আমজনতা। পূর্ব মেদিনীপুরে বিক্ষোভকারীদের উপর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠল জেলারই পটাশপুরে। শুক্রবার এই ঘটনায় কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পটাশপুর দাইতলা বাজার। জখম হন তিন সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ অন্তত ছ’জন। পুলিশ অবশ্য লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ছোড়া হয়েছে কাঁদানে গ্যাস।

Advertisement

পটাশপুর-২ ব্লকে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাউয়ের বিরুদ্ধে রেশন সামগ্রী বিলি এবং আমপান ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ দিন পটাশপুরের হরিডাঙর মোড়ে চন্দন নিজের ইমারতি সামগ্রীর দোকানে এসে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, পরিযায়ী শ্রমিকদের পর্যাপ্ত রেশন দেওয়ার দাবিতে এগরা-পটাশপুর রাস্তা অবরোধও করেন এলাকাবাসী এবং তৃণমূলেরই একাংশ কর্মী-সমর্থক।

পরে পটাশপুর থানার পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে চন্দনকে উদ্ধার করে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। তখনই উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। ক্ষিপ্ত জনতাও লাঠি, বাঁশ, ইট নিয়ে পাল্টা পুলিশকে আক্রমণ করেন। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি-সহ একাধিক বাস, লরি। আহত ছ’জনকে পটাশপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘কারা কারা ভোটে দাঁড়াতে চান, হাত তুলুন’, বৈঠকে দিদির গুগলি

পরিস্থিতি তার পরেও থিতোয়নি। লাঠিচার্জের প্রতিবাদে ফের পটাশপুর-এগরা সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। শেখ বাবলু নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের রেশন এবং ক্ষতিপূরণের টাকা কেড়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা। তারই প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ।’’ পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র‌্যাফ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।

এগরার এসডিপিও শেখ আখতার আলি অবশ্য বলেন, ‘‘লাঠিচার্জ করা হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির উপরে স্থানীয়রা হামলা করায় পুলিশকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়েছিল। জনতার ছোড়া ইটের ঘায়ে তিন সিভিক ভলান্টিয়ারের মাথা ফেটেছে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়েছে।’’ দুর্নীতি প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দনের অবশ্য দাবি, ‘‘ফুড কুপন না পেয়ে কেউ যদি আবেদন করে, তাহলে নিশ্চয়ই কুপন দেওয়া হবে। কিন্তু বাড়তি রেশন এবং মাসিক ভাতা চাইলে কোথা থেকে দেব। তৃণমূলের কিছু সুবিধাভোগী কর্মী এবং বিজেপি, বামেদের উস্কানিতে ঝামেলা পাকানো হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: নবান্নে দাদা, গুঞ্জন বাড়ছে ‘ব্যাটিং কৌশল’ ঘিরেই

জেলা সদর তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে আবার ধলহারা পঞ্চায়েতের প্রধান আতিয়ার রহমানের ঘনিষ্ঠদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদেরই একাংশ। আতিয়ার তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া নেতা দিবাকর জানার অনুগামী পরিচিত। তিনি বৃহস্পতিবারই দিবাকরের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী জয়দেব বর্মণের অনুগামী শোভা সাউয়ের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ দিন তমলুক মহকুমা প্রশাসনের একটি দল এলাকায় তদন্তের জন্য গিয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement