প্রতীকী ছবি।
বাঁচালে বাঁচাতে পারত বাঁধ। কিন্তু ৫০০ মিটার অংশে সে ধুয়ে মুছে গিয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন,‘‘বাড়ি-ঘর তো ভেসেই গিয়েছে। চাষের জমিটুকু যদি বাঁচাতে না-পারি, সারা বছর না-খেয়ে মরব। সরকারকে বলুন, আগে বাঁধটুকু সারাতে।’’
কিন্তু সে কথা শোনার লোক এখন আর কোথায়! তাই গ্রামের মানুষ নিজেরাই যতটুকু সাধ্য, সবটুকু কাজে লাগিয়ে বাঁধ সারাইয়ের কাজে নেমে পড়েছেন। কিন্তু বস্তাভর্তি মাটি ফেলে হু হু রে ঢুকতে থাকা জল আটকানোর চেষ্টা যে জলেই যাবে, তা কি আর জানেন না নদীপাড়ের মানুষ!
শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির ভুবনেশ্বরী গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, মাইলের পর মাইল এলাকা চলে গিয়েছে জলের তলায়। পথে অগুনতি বিদ্যুতের খুঁটি আর গাছ ভেঙে পড়ে আছে। মাটির বাড়ি সবই প্রায় নিশ্চিহ্ন। গোটা এলাকা বিদ্যুৎবিহীন। সরকারি লোকজনকে এখনও গ্রামে দেখা যায়নি বলে জানালেন অনেকেই।
হালদার ঘেরি নদীবাঁধের কাছে পৌঁছে দেখা গেল, বাঁধ বলে আলাদা করে আর কিছু বোঝাই যাচ্ছে না। সবটাই জলের তলায়। কিছু লোক জল আটকানোর চেষ্টা করছেন। তবে ইতিমধ্যেই জল ঢুকে কয়েকশো বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে। মাছের ভেড়িতে নোনা জল ঢুকে সব মাছ মরে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: হিসহিস করছিল যেন রাগী গোখরো, জমি আর চোখের নোনা জল একাকার
স্থানীয় এক বাসিন্দা হাতজোড় করে বললেন, “দয়া করে প্রশাসনকে বলুন, আগে বাঁধটা সারাতে। ঘরবাড়ি যা যাওয়ার তা তো গিয়েছে। আরও জল ঢুকলে যেটুকু চাষের জমি আছে, সেটাও শেষ হয়ে যাবে।না-খেতে পেয়ে মরা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।” ক্ষোভ উগরে দিলেন আরও অনেকে। তাঁদের কথায়, “বাঁধ যেখানে যা ভেঙেছে, গ্রামবাসীরাই কোনও রকমে মেরামত করছেন। কোথাও প্রশাসনের লোকজনকে দেখা যায়নি। ত্রাণ-ত্রিপলের ব্যবস্থাও সে ভাবে হচ্ছে না।”
ফেরার পথে দেখা হল স্থানীয় যুবক পিন্টু মণ্ডলের সঙ্গে। বললেন, “ভুবনেশ্বরী, মধ্যগুড়গুড়িয়ার অধিকাংশ জায়গারই অবস্থা খুব খারাপ। স্বাভাবিক হতে বছর ঘুরে যাবে। নিজেরাই কোনও রকমে চাল, আলু জোগাড় করে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করেছি। কাল এক বার ব্লক অফিসে যাব। হাতে পায়ে ধরে যদি ক’টা ত্রিপল জোগাড় করা যায়!”