নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
করোনা সঙ্কটের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) থাবা বসিয়েছে রাজ্যে। এমন পরিস্থিতিতে রাজনীতি না করে একযোগে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসা উচিত সকলের। শনিবার নবান্ন থেকে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ নির্বাচনের সময় যতখুশি রাজনীতি করুন। কিন্তু এই বিপর্যয়ের সময় ক্ষান্ত দিন। এই পরিস্থিতিতে দয়া করে ক্ষুদ্র রাজনীতি করবেন না।’’
আমপান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এ দিন ২০০৯-এর আয়লার প্রসঙ্গও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দুর্যোগ যখন আসে সহ্য করতে হয়। ধৈর্য ধরতে হয়। আয়লার সময় আমি কিন্তু সমালোচনা করিনি। নোটবন্দি, ঘরবন্দি সবসময় সহযোগিতা করে এসেছি। মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করবেন না। এটা রাজনীতি করার সময় নয়।’’
ঘূর্ণিঝড় আমপানের প্রভাবে তছনছ হয়ে গিয়েছে গোটা বাংলা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই ২৪ পরগনা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কলকাতাও পূর্ব মেদিনীপুরে। দুর্যোগের পর ৭২ ঘণ্টা কেটে গেলেও, এখনও বড় বড় গাছ পড়ে রয়েছে একাধিক জায়গায়। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। নেই পানীয় জলের জোগানও। এমন পরিস্থিতিতে একাধিক জায়গায় রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সাধ্যমতো চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। আমাদের ১ হাজারটি দল কাজ করছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকতে হয়েছে। প্রশাসন ব্যস্ত ছিল। মাত্র দু’দিনের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক করা কি সম্ভব? জেলায় মানুষ আরও কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা কী ভাবে সহ্য করছেন? পুলিশ লকডাউন সামলাবে নাকি ঝড় সামলাবে?’’
আরও পড়ুন: আমপানের ধাক্কা সামলাতে এ বার সেনার সাহায্য চাইল রাজ্য
কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিইএসসি বেসরকারি সংস্থা। সিপিএম-এর আমল থেকে দায়িত্ব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দোষারোপের জায়গা নেই। লকডাউনের জেরে ওদের অনেক কর্মী বাড়ি চলে গিয়েছেন।কর্মীর অভাবে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। সমস্যাটা বুঝতে হবে সকলকে। সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। জেনারেটর নামিয়ে আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেছি। আমরাও কেউ ঘুমিয়ে নেই। সল্টলেক স্টেডিয়াম, নেতাজি ইন্ডোর থেকে জেনারেটর তোলা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৮০-৯০টা জেনারেটর জোগাড় করেছি। আমাদের টিম রাত জেগে কাজ করছে। আশাকরি আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন: ‘আপনারা আগে আপনাদের কাজ করুন, কেন্দ্রকে বলা উচিত আরবিআই-এর’, বললেন চিদম্বরম
প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে মাঝে কয়েক দিন শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন বন্ধ রেখেছিল রাজ্য সরকার। তবে ২৭ তারিখ থেকে ফের পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো শুরু করতে কেন্দ্রকে আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। রাজ্যে ফিরে ওই সমস্ত পরিয়ায়ী শ্রমিকদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে বলেও জানান তিনি। করোনার সংক্রমণ রুখতে এ বার সকলকে বাড়িতে বসেই ইদ পালনেরও আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী।