Cyclone Amphan

লাইভ: দিঘা থেকে ৪৭০ কিমি দূরে আমপান, ঝোড়ো হাওয়া উপকূলে

ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর আমপানের গতিমুখ ছিল উত্তর-পশ্চিম দিকে। এখন তা বাঁক নিয়ে সরাসরি এ রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ১০:২১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

পশ্চিমবঙ্গের আরও কাছে চলে এল সুপার সাইক্লোন ‘আমপান’ (প্রকৃত উচ্চারণ উম্পুন)। রাত সাড়ে আটটায় আলিপুর আবহাওয়া দফতরের দেওয়া বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে দিঘা থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় আমপান। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে রয়েছে। বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। স্থলভাগে যখন আছড়ে পড়বে ঘূর্ণনের গতিবেগ হবে ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। এমনকি তা ১৮৫ কিলোমিটারও ছাড়িয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে হবে প্রবল জলোচ্ছ্বাস।

Advertisement

ঘুর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূল এলাকার তিন জেলা দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে চূড়ান্ত সতর্ক করা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যের তিন জেলা থেকে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া নবান্নে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০। এ ছাড়া অন্য দু’টি নম্বর হল ২২১৪-৩৫২৬ ও ২২১৪-১৯৯৫।

রাজ্যের উপকূল এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) কর্মীরা। উপকূল বরাবর মোট ১৯টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করছেন। এ ছাড়া রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও তৈরি রয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে।

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

আমপান এক নজরে

• বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে আমপানের মোকাবিলা করতে সুন্দরবন এলাকায় এক ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।আর এক ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে ইছামতী নদীতে।

• দিঘা, কাঁথি, খেজুরি এবং নন্দীগ্রাম-সহ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, কোস্টাল পুলিশ এবং নুলিয়ারা টহলদারি চালাচ্ছে। সঙ্গে মাইকিং-ও চলছে

• শঙ্করপুর থেকে তাজপুরের মাঝে কয়েকটি জায়গায় সমুদ্রবাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেচ দফতর এ রকম বেশ কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ শুরু করেছে।

• আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঝড়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে দুই ২৪ পরগনায়। তার পর কলকাতায়।

• উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। হাওয়ার বেগ বাড়ছে উপকূলীয় অঞ্চলে।

• কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জে বৃষ্টি শুরু।

• বৃষ্টি শুরু হয়েছে কলকাতাতেও।

• ফেরি সার্ভিস চালানো যাবে না

• দিঘা, মন্দারমণি, বকখালিতে কোনও পর্যটক নয়

• সব্জিচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে

• ২১ মে-র আগে সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে

• দোকান, বাজার বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে

• বুধবার বেলা বাড়লে হাওয়ার গতি বাড়বে

• কলকাতা হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি হবে

• ঝড়, বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস থেকে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে

• দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা। জোরাল প্রভাব পড়বে হাওড়া, হুগলিতেও।

• ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

• গাছ, পুরনো বাড়ি নিয়ে সতর্কতা কলকাতায়

• কলকাতায় সকাল থেকে ঝড়। হাওয়ার গতি থাকবে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৩০ কিমি

• হাওড়া-হুগলিতে হাওয়ার গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১২০ কিমি

• বুধবার ঝড়ের গতি থাকবে ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে ১৮৫ কিমি

• বুধবার উত্তর দিকে এগবে আমপান

• দিঘা থেকে ৬৩০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে আমপান

• পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতায় ঘূর্ণনের গতিবেগ থাকবে ১১০-১৩০ কিলোমিটার।

• উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ঘূর্ণনের গতিবেগ হতে পারে ১৬৫-১৯৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।

• উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৪-৬ মিটার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। নীচু এলাকাগুলো তাতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

• আমপানের প্রভাবে বুধবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতায়।

• বৃস্পতিবার ভারী বৃষ্টি হবে উওর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু জায়গায়, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের কিছু অংশে।

• বুধবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হবে সিকিমে।

• ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও কলকাতায়।

• ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে কাঁচা বাড়ি, পুরনো বাড়িগুলো।

• বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ উপড়ে যেতে পারে।

• ২১ মে পর্যন্ত মত্স্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

• বেশ কিছু ট্রেনের রুট বদলের সম্ভবনা রয়েছে। প্রয়োজনে বাতিলও হতে পারে।

• যে এলাকায় ঝড়ের প্রভাব পড়বে, সেখানে বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নীচু এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।

নিম্নচাপ চাপ থেকে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর আমপানের গতিমুখ ছিল উত্তর-পশ্চিম দিকে। এখন তা বাঁক নিয়ে সরাসরি এ রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে। এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথে রয়েছে দিঘা থেকে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপ। সোমবার আমপান শক্তি বাড়িয়ে ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হয়েছিল। আজ সামান্য কিছুটা শক্তি হারিয়েছে, তবে এখনও ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনে’র রূপ নিয়েছে। ফলে সমুদ্র থেকে যখন স্থলভাগে আমপান আছড়ে পড়বে তার গতি থাকবে প্রবল। আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সাগরদ্বীপ এবং সুন্দরবন অঞ্চলে। যদিও এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না ঠিক কোথায় ছোবল মারবে আমপান। তবে যা গতিপথ রয়েছে তাতে মনে করা হচ্ছে সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপ এবং সুন্দরবন এলাকায় সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

উপকূলবর্তী এলাকায় সমুদ্র এবং নদীর জল নীচু এলাকায় ঢুকে যাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমপানের মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে রাজ্য প্রশাসন। দিঘা থেকে সুন্দরবন সমস্ত উপকূলবর্তী এলাকায় রয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। তীরবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সাইক্লোন সেন্টারে সরানো হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা ছাড়াও কলকাতাতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে আমপানের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement