অতীতের সংসার এখন নিছক কয়েকটা খুঁটি। বাকি সব চলে গিয়েছে আমপানের (প্রকৃত নাম উম পুন) গ্রাসে। আরও অসংখ্য রাজ্যবাসীর সঙ্গে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে কুলতলির এই বাসিন্দাও।
তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়েছে মানুষের আশ্রয়। শেষ থেকে শুরু করার রসদ খুঁজছেন গোবরডাঙার বহু বাসিন্দা।
গাছের শিকড় থেকে ঢালাই করা স্তম্ভ। আমপানের তাণ্ডবে সবই আজ স্থানচ্যুত। আমপানের তাণ্ডবলীলার চিহ্ন ছড়িয়ে আছে উত্তর চব্বিশ পরগনার স্বরূপনগরের সর্বত্র।
ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবলীলায় এ ভাবেই দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে গোবরডাঙার বিস্তীর্ণ অংশের ঘরবাড়ি।
রাজ্যের সব অংশেই নির্বিচারে আমপানের মাশুল দিয়েছে অসংখ্য গাছ। স্বরূপনগরে নলকূপের উপর ভেঙে পড়া গাছ এখনও সরানো হয়নি। আরও গভীর স্থানীয় বাসিন্দাদের পানীয় জলের সঙ্কট।
আমপানের প্রলয়লীলার দগদগে ক্ষত ছড়িয়ে আছে রাজ্য জুড়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে এক রাতের মধ্যে আশ্রয়হীন অসংখ্য পরিবার। সংসারের খুঁটিনাটি নিয়ে অগণিত মানুষের আশ্রয় এখন খোলা আকাশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠেও জনজীবন বিধ্বস্ত মহাঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে।
সুন্দরবনের কাছে গোসাবায় লাইটপোস্ট আর বিজ্ঞাপনের কাঠামো একসঙ্গে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে জলের স্রোত গ্রাস করেছে অগণিত মানুষের স্বপ্ন।
কুলতলিতে আমপানের তাণ্ডবে ধসে পড়েছে বহু কাঁচাবাড়ি। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে স্থানীয় বাসিন্দারা।
কুলতলির আর এক প্রান্তে সন্তানকে কোলে নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে অসহায় মা।
নামখনায় গাছ উপড়ে পড়ে মাঝখান থেকে ভেঙে দু’টুকরো বাসস্থান। ধ্বংসস্তূপ থেকেই প্রয়োজনীয় সাংসারিক জিনিসের খোঁজে আশ্রয়হীন মুখগুলি।
তাণ্ডববিধ্বস্ত হিঙ্গলগঞ্জেই খড়কুটোকে সম্বল করে নতুন জীবনের খোঁজে স্থানীয় বাসিন্দারা।
আমপানের প্রলয়ে রাতারাতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে মিনাখা। আদিগন্ত জলের মাঝে বাঁচার পথ খুঁজছে অসহায় মানুষ।
আমপানের দাপটে মিনাখা আজ ভগ্নস্তূপ। সেখান থেকেই নতুন করে সব গড়ে নিতে চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
খোলা মাঠে কাত হয়ে পড়ে আছে কাঠামো। নদিয়ার শান্তিপুরে বোঝা-ই যাচ্ছে না আমপানের আগে ঠিক কী ছিল সেখানে।
আকাশ থেকে দেখলে উত্তর ২৪ পরগনার চারদিকে শুধু জল আর জল। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের দু’দিন পরেও অবস্থা একইরকম।
এক চিলতে সংসার ভেঙে কয়েক খণ্ড হয়ে গিয়েছে আমপানের তাণ্ডবে। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে ঘরের ধ্বংসস্তূপের সামনে নিরুত্তর আশ্রয়হীনরা।
বীরভূমের লায়েকবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন সুখ দুঃখের সাক্ষী হয়তো ছিল এই বিশাল গাছটি। আমপানের তাণ্ডবে আজ সে নিজেই ভূমিচ্যুত।
সারা রাজ্যের অন্য অংশের মতো গাছ পড়ে পথ বন্ধ পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায়। কিছুটা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ শুরু করেছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা।
এখানেই ছিল সাধের সংসার। আমপানের দাপটে আক্ষরিক অর্থেই মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে দরমার ঘর। সেখান থেকেই কোনওমতে শেষ সম্বল বার করে আনছেন গোসাবার এক গৃহহীন।
গাছ পড়ে স্তব্ধ বসিরহাটের জনজীবনও। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ।
আমপানের প্রলয়লীলায় গাছ পড়ে হাওড়ার বালিতে। কবে ফিরবে স্বাভাবিক জীবন? অপেক্ষার প্রহর গুনছে আমপান-ধ্বস্ত বাংলা। ছবি: নিজস্ব চিত্র এবং বিভিন্ন এজেন্সি।