ছবি এএফপি।
আমপানের জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে অবশেষে রাজ্যে এল কেন্দ্রীয় দল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব অনুজ শর্মার নেতৃত্বে সাত সদস্যের আন্তঃমন্ত্রক পর্যবেক্ষক দলটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতা এসে পৌঁছয়। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ, শুক্রবার সকালে চারটি দলে ভাগ হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমপান-বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন পর্যবেক্ষকেরা। শনিবার নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁদের।
শুক্রবার সকালে পর্যবেক্ষকদের একটি দল সড়ক পথে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের কলেজ মাঠে পৌঁছবে। আর একটি দল হেলিকপ্টারে সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ এলাকার অবস্থা খতিয়ে দেখে সকাল ১০টা নাগাদ পাথরপ্রতিমা কলেজ মাঠের হেলিপ্যাডে নামবে। এর পরে ওই এলাকায় দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলবেন পর্যবেক্ষকেরা। পরে লঞ্চে চেপে রামগঙ্গা, ব্রজবল্লভপুর ও ভারতহাট এলাকায় বাঁধের পরিস্থিতি দেখবেন তাঁরা। পর্যবেক্ষণ শেষে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কলকাতায় ফিরবেন।
শুক্রবারই অন্য দু’টি দল সড়কপথে ও হেলিকপ্টারে উত্তর ২৪ পরগনা ধামাখালি ও সন্দেশখালি-১ ব্লকে পৌঁছবে। হেলিকপ্টারে চড়ে ঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ করে সরবেড়িয়া হেলিপ্যাডে নামবেন পর্যবেক্ষকেরা। বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সন্দেশখালি ও ন্যাজাট ব্লকেও ঘুরবেন তাঁরা। সেখানেও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হবে।
আরও পড়ুন: পরীক্ষার খরচ কমবে কবে, উঠছে প্রশ্ন
আমপানের পরেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে আকাশপথে ক্ষয়ক্ষতি দেখেন তিনি। দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগেই অগ্রিম এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই অর্থ ইতিমধ্যেই রাজ্য পেয়ে গিয়েছে। পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির হিসেব কষতে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত তখনই নিয়েছিল কেন্দ্র। বুধবারই কেন্দ্রীয় দল আসার খবর সরকারি ভাবে জানতে পারে নবান্ন। রাজ্যের অভিমত, প্রধানমন্ত্রী ঘুরে যাওয়ার পর পরই দল এলে ভাল হত।
কারণ, আমপানের প্রভাব কাটার পরেই ত্রাণ এবং পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। বাঁধ, রাস্তা, ঘর-বাড়ি মেরামতের কাজ চলছে। আগে এলে ক্ষতগুলি আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা যেত।
আরও পড়ুন: কো-মর্বিডিটি কত, ফের বলবে স্বাস্থ্য ভবন
রাজ্য সরকারের দাবি, সব মিলিয়ে এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি করেছে আমপান। বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার তথ্য প্রস্তুত করে রেখেছে। কেন্দ্রীয় দলের হাতে তা তুলে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলে অনুজ শর্মা ছাড়াও রয়েছেন কৃষি মন্ত্রকের অধিকর্তা নরেন্দ্র কুমার, মৎস্য দফতরের সহকারী কমিশনার আর পি দুবে, খরচ সংক্রান্ত বিভাগের অধিকর্তা এস সি মিনা, জল মন্ত্রকের ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধার্থ মিত্র, বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধিকর্তা রিশিকা শরণ এবং সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের ইঞ্জিনিয়ার সমীরণ সাহা।