প্রতীকী ছবি
দুষ্কৃতী দমনে অন্ধকার জগতে নিজেদের চরকে কাজে লাগানো পুলিশের পুরনো কৌশল। এ বার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বা সমাজমাধ্যমে উস্কানিমূলক প্রচার বা গুজব ছড়ানো রুখতে সাইবার-চর নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে। অভিসন্ধিমূলক উস্কানি বা গুজব ছড়ানোর দুষ্কর্মে যুক্ত সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে সদস্য হিসেবে চর ঢুকিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা জেনে নিয়ে অপচেষ্টার উদ্যোগ পর্বেই জল ঢেলে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
পয়গম্বর সম্পর্কে বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশের অন্য প্রান্তের সঙ্গে বাংলারও কয়েকটি জেলা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাজ্যের বাকি অংশে কেউ যাতে সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপকে ব্যবহার করে উত্তেজনার সৃষ্টি করতে না-পারে, সেই কারণে ওই পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। তাতে কিছুটা সাফল্য এসেছে বলে পুলিশের দাবি।
নতুন পদ্ধতিটি কী রকম?
নবান্ন সূত্রের খবর, বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে উস্কানিমূলক প্রচার বা গুজব ঠেকাতে সিআইডি ছাড়াও সব জেলায় একটি করে সাইবার মনিটরিং সেল আছে। বিভিন্ন থানা নিজেরাও সোশ্যাল মনিটরিং সেল গঠন করেছে। তাদের কাজ হল সমাজমাধ্যমের বিভিন্ন প্রোফাইল এবং গ্রুপের উপরে নজরদারি চালানো। সেই জন্য পুলিশের তরফে নাম ভাঁড়িয়ে ফেক প্রোফাইল বানিয়ে ওই ধরনের গ্রুপের সদস্য হওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কে বা কারা কোন প্রোফাইল থেকে এই ধরনের অভিসন্ধিমূলক প্রচার চালাচ্ছে, তা-ও চিহ্নিত হয়ে যাচ্ছে সহজে। পরে তাঁদের থানায় ডেকে এনে ব্যবস্থা গ্রহণের সঙ্গেই ওই পোস্ট ডিলিট করানো হচ্ছে।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘নেট দুনিয়ায় অনেক কিছু ঘুরে বেড়ায়, যা আমাদের নজরের বাইরে থেকে যায়। তাই একাধিক ভুয়ো প্রোফাইল বানিয়ে সন্দেহভাজন গ্রুপের সদস্য হয়ে সেখানে বসে নজরদারি চালাতে বা এই বিষয়ে খোঁজ রাখতে সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশের মতো যাঁরা একদম নিচু তলায় কাজ করেন, তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধের সঙ্গে জড়িত একাধিক পুলিশ অফিসার জানান, অভিযুক্তেরা ভুয়ো প্রোফাইল বানিয়ে তা থেকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক প্রচার চালিয়ে পরিবেশ অশান্ত করতে চাইছে। এই প্রবণতা আটকানোর জন্য ঠিক তাদের কায়দাতেই পুলিশের লোক ঢোকাতে হয়েছে। তবে পুলিশেরই একটি সূত্রের বক্তব্য, সব সময় যে সব গ্রুপের কার্যকলাপ গোয়েন্দাদের নজরে আসছে, তা নয়। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, গত কয়েক দিনে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে উস্কানিমূলক প্রচার ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় কুড়িটির বেশি সাইবার অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতিটা জেলাকে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি বাড়াতে হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।