ফাইল চিত্র।
লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকেই। এ বার পশ্চিমবঙ্গে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিত থাকতে চলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। সেই বাহিনী আসতে পারে নির্বাচনের কিছু দিন আগেই।
আধাসেনার হাজিরায় উপনির্বাচন সম্পর্কে সরাসরি কিছু না-বললেও নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম পদক্ষেপ করা হবে।’’ ২৫ নভেম্বর ওই তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। বুধবার তার মনোনয়নপত্র পেশ শুরু হয়েছে। সেই কাজ চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত।
অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের বক্তব্য, নভেম্বরের শেষ পর্বে রাজ্যে প্রাকৃতিক উষ্ণতা কিছুটা কমলেও উপনির্বাচনের উত্তাপ ভালই থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোটা কমিশনের কাছে খুবই চ্যালেঞ্জের। ওই তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সম্ভাব্য উপস্থিতি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে কমিশনের অন্দরে। উপনির্বাচনে অশান্তি এড়াতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে বিজেপি। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, শুধু আধাসেনা কেন, আন্তর্জাতিক বাহিনী এলেও উপনির্বাচনে জয় হবে তাঁদেরই।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। জেলা প্রশাসনের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।’’ তবে নদিয়া জেলা প্রশাসন সীমান্তের লাগোয়া করিমপুরে নাকা-চেকিংয়ের কাজ শুরু করেছে। বিএসএফ বা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে জেলা প্রশাসন।
উপনির্বাচন হচ্ছে খড়্গপুর সদর, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। ২৭০টি করে বুথ রয়েছে কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুর সদর আসনে। করিমপুরে বুথের সংখ্যা ২৬১। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সব মিলিয়ে ৮০১টি বুথে উপনির্বাচনের ফলে রাজ্য বিধানসভার চিত্রে বড় কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে রাজ্য-রাজনীতিতে এই উপনির্বাচনের যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে। কারণ, লোকসভা ভোটের পরে বঙ্গে এই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত চার-পাঁচ মাসের রাজ্যে পদ্মের ভোটের রেখাচিত্র ঊর্ধ্বমুখী না নিম্নমুখী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে পারল কি না, রাজ্য-রাজনীতির মানচিত্রে বাম-কংগ্রেস কতটা জায়গা রাখতে পারছে—এই উপনির্বাচনে তার একটা সুস্পষ্ট আভাস মিলতে পারে।
কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুতে কালিয়াগঞ্জ আসনটি শূন্য হয়েছে। বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হওয়ায় যথাক্রমে খড়্গপুর সদর এবং করিমপুর আসনে জরুরি হয়ে পড়েছে উপনির্বাচন। তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। জোট গড়ে এই উপনির্বাচনে লড়ছে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট।