ভিড়: কংগ্রেসের মিছিলে অধীর। নিজস্ব চিত্র
প্রায় ৯ বছর পর সোমবার কংগ্রেসের মিছিলে ফের এমন জনজোয়ার দেখল রায়গঞ্জ। একসময়ে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল উত্তর দিনাজপুর। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই সেখানে কংগ্রেসের ভাঙন শুরু হয়। তারপর এ দিন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন নীতির প্রতিবাদে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিলে পা মেলালেন দশ হাজারেরও বেশি নেতা, কর্মী ও সমর্থক। যা দেখে উৎসাহিত কংগ্রেস শিবির। উল্টোদিকে, এই সমাবেশকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল কিংবা বিজেপি দু’পক্ষই।
এ দিন মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন অধীর এবং রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। রায়গঞ্জের জেলখানা মোড় থেকে শিলিগুড়ি মোড় পর্যন্ত মিছিল এগোতেই ভিড় বাড়তে থাকে। কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন বঞ্চনার শ্লোগান উঠতে থাকে মিছিল থেকে। মিছিল শেষে শিলিগুড়ি মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন অধীর। সেই পথসভায় হাজার-হাজার নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের ভিড়ের জেরে রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের একটি অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ হাসপাতাল মোড় থেকে শিলিগুড়ি মোড় পর্যন্ত যানজটও লেগে থাকে।
এ দিন অধীর বলেন, “উত্তর দিনাজপুর জেলায় দলের এত বিপর্যয়ের পরেও কংগ্রেস আছে, তার প্রমাণ দিতে চলেছি। তৃণমূল দল ভাঙিয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করতে পারেনি। স্বর্গীয় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জেলায় কংগ্রেস ছিল, আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে।”
১৯৯৯ থেকে টানা দশবছর রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন প্রিয়রঞ্জন। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর ২০০৯ সালে রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ নির্বাচিত হন প্রিয়ঘরণী দীপা। তবে ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতা দখলের পর কংগ্রেসের দখলে থাকা জেলার বেশিরভাগ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, বিধানসভা ও পুরসভা একে একে তৃণমূলের দখলে চলে যায়। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জে দীপাকে হারিয়ে জয়ী হন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। এই প্রেক্ষাপটে এ দিন মিছিলে জনস্রোত আছড়ে পড়ায় জেলায় ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বুক বেঁধেছেন কংগ্রেস।
এ দিন জেলা কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি পবিত্র চন্দের দাবি, ‘‘প্রায় এক দশক পর কংগ্রেসের কোনও কর্মসূচিতে এত মানুষের ভিড় হল।’’ তবে এ দিনের সমাবেশ নিয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাসের কটাক্ষ, “ফাঁকা কলসির বেশি শব্দ হয়। জেলায় কংগ্রেসের কী শোচনীয় হাল, তা গত লোকসভা নির্বাচনের ফলেই স্পষ্ট হয়েছে।”