প্রতীকী ছবি।
হাতে করে নিয়ে আসুন পুরনো বা পড়ে ফেলা বইটা। স্টলে খুঁজে দেখে তুলে নিন পছন্দের কোনও বই। পাড়ায় পাড়ায় গ্রন্থাগারে বই পড়ার অভ্যাস যখন মৃতপ্রায়, সেই সময়েই এমন আর্জি নিয়ে আসর সাজাচ্ছে সিপিএমের যুব সংগঠন। উদ্দেশ্য, বই বিনিময়ের অবসরে আড্ডা এবং জনসংযোগ গড়ে তোলা।
কলকাতা থেকেই পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হয়েছে ডিওয়াইএফআইয়ের বই বিনিময়। যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওই অনুষ্ঠানে সাড়া পাওয়ার পরে এ বার সারা রাজ্যে ওই কর্মসূচি ছড়িয়ে দিতে চাইছেন যুব সিপিএম নেতৃত্ব। বইকে হাতিয়ার করেই তাঁরা বার্তা দিতে চান, প্রস্তাবিত রথযাত্রা নিয়ে উন্মাদনা ছাড়াও ভাবনার আরও রসদ এখনও আছে! মেরুকরণের আবহে নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখাই সিপিএম এবং তাদের যুব সংগঠনকে বাধ্য করছে নতুন নতুন ভাবনা সামনে নিয়ে আসতে।
উৎসবের সময়ে পুস্তক বিপণি খোলা বাম রাজনৈতিক দলের বহু দিনের রেওয়াজ। তবে সেখানে বই বিক্রি করা হয়। যুব সংগঠনের নতুন উদ্যোগে বই হাত বদল করা হচ্ছে। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্রের কথায়, ‘‘সকলের চাহিদার সব রকম বই তো একটা স্টলে পাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের সাধ্যমতো কিছু বই নিয়ে এই উদ্যোগটা হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রী হোন বা যে কোনও অংশের মানুষ এসে পুরনো বইয়ের বদলে পছন্দের বই নিতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কর্মী এবং মানুষের মধ্যে মতের আদানপ্রদান চাইছি আমরা।’’
বইয়ের মারফত সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানোর চেষ্টার পাশাপাশিই এই উদ্যোগের মাধ্যমে অন্য একটি সাংগঠনিক লক্ষ্যও আছে ডিওয়াইএফআইয়ের। কোনও না কোনও সময়ে সিপিএমের এই যুব সংগঠনে কাজ করেছেন কিন্তু পরবর্তী কালে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, এমন প্রাক্তনদের সঙ্গে এই বইয়ের আসরে আবার যোগসূত্র ঘটাতে চাইছে তারা। সায়নদীপ বলছেন, ‘‘বইকে সেতু করেই পুরনো নেতা-কর্মীদের আবার কাছে পেতে চাইছি আমরা।’’ বইয়ের ব্যবস্থাপনার জন্য কিছু গ্রন্থাগারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
যাদবপুরের যে আঞ্চলিক কমিটির নেতারা এই নতুন কর্মসূচির পথ দেখিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা রাম মন্দির চাই না, হনুমান মন্দিরও চাই না। রথযাত্রা চাই না, পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের জলসাও চাই না। চাই শিক্ষার পরিবেশ থাকুক। সুস্থ বিতর্ক চলুক।’’ কলকাতার আশেপাশের এলাকায় বই বিনিময় করে তার পরে অন্যান্য জেলায় একই কর্মসূচি ছড়িয়ে দিতে চান যুব সিপিএম নেতৃত্ব।