(বাঁ দিক থেকে) বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।
সিপিএমের যুবফ্রন্টের বর্ধিত ‘ফ্র্যাকশন’ সভায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেন রাজ্যভার সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর একটি সাক্ষাৎকারে বিকাশ বলেছিলেন, “ক্যাপ্টেন, আগুনপাখি বলা ব্যক্তিপ্রচার হচ্ছে।” তা নিয়ে বিভিন্ন জেলার যুবনেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্যনেতৃত্বের সামনে।
শনিবার সিপিএমের যুব ফ্র্যাকশন কমিটির বর্ধিত বৈঠক ছিল শ্রমিক ভবনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং আভাস রায়চৌধুরী। সেই বৈঠকে যুবনেতারা বলেন, কী ভাবে বিকাশ ভট্টাচার্য প্রকাশ্যে যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওই মন্তব্য করতে পারেন? ওই উক্তির জন্য কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? রাজ্যসভার বক্তৃতায় বিকাশ ভাষা সংক্রান্ত বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়েও সমালোচনার সুর চড়িয়েছেন যুবনেতারা।
উল্লেখ্য, মিনাক্ষীকে ‘মুখ’ হিসাবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে সিপিএমই। এর মধ্যে কোনও লুকোছাপা নেই। অনেকের মতে, সিপিএমের গোষ্ঠী বিভাজনে লোকসভা ভোটের পরে দলের একটা অংশ মিনাক্ষীকে ‘লক্ষ্যবস্তু’ করতে চাইছে। সিপিএম সূত্রে খবর, মিনাক্ষীকে পছন্দ করেন না, এমন কয়েক জন নেতাও বিকাশের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য বিকাশকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
শুধু মিনাক্ষী নন, কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে সিপিএমের জোট করার প্রবণতা নিয়েও যুবনেতারা গর্জে উঠেছেন। তাঁদের বক্তব্য, নিজেদের সংগঠনকে নিজেদের পায়ে দাঁড় করাতে গেলে পরনির্ভরশীলতা ছাড়তে হবে।
সিপিএমপন্থী আইনজীবীরা চাকরিপ্রার্থীদের মামলা করে টাকা ‘লুট’ করেছেন কি না তা-ও খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন কেউ কেউ। প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সম্প্রতি একটি তথ্য সমাজমাধ্যমে দিয়ে দাবি করেছিলেন, সিপিএমের এক আইনজীবী নেতা চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়েও তাঁদের সমস্যার সুরাহা করে দিতে পারেননি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক যুবনেতা বৈঠকে বলেন, “যা চলছে তা চলতে দেব না। মৌরসিপাট্টা ভাঙবই।” সেলিম যে বিকাশের ওই মন্তব্যকে সমর্থন করেন না, তা আগেই বলেছিলেন। তিনি এ-ও বলেছিলেন, “কেউ কেউ খবরে থাকতে চান। তাই পার্টিতে না বলে বাইরে বলছেন।”
সিপিএম সূত্রে খবর, বিকাশ নিয়ে সেলিমেরা তেমন কিছু না বললেও রাজনৈতিক বাস্তবতার কথা তুলে কংগ্রেসের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তবে যুবফ্রন্টে যে ক্ষোভের আগুন রয়েছে, আলিমুদ্দিন তা বিলক্ষণ টের পেয়ে গিয়েছে বলেই দাবি দলের অনেকের।