—প্রতীকী ছবি।
যুব সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ মনোবল বাড়িয়েছে। সেই ‘সাফল্যে’ ভর করেই লোকসভা নির্বাচনের পুরো দমে প্রস্তুতি শুরু করছে সিপিএম। দলীয় সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তরুণ মুখকে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে যখন প্রবীণ বনাম নবীন দ্বন্দ্ব তুঙ্গে, তখন লোকসভা ভোটের ময়দানে প্রার্থী তালিকা থেকে বুথ স্তরের লড়াই— সব ক্ষেত্রেই তরুণ প্রজন্মকে সামনে রাখতে চাইছে সিপিএম।
রাজ্যে শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবিতে ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে রবিবার ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। আগত জনতার বড় অংশই ছিলেন সাধারণ, খেটে-খাওয়া মানুষ। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের নেতৃত্বে ‘ইনসাফ যাত্রা’ও তার আগে সাড়া পেয়েছিল ভাল। ব্রিগেডে যুব নেতৃত্বের হাতেই সমাবেশের রাশ তুলে দিয়ে বিমান বসুরা বসেছিলেন নীচে। পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট বাড়ানোর পরে লোকসভা নির্বাচনেও সমর্থন বাড়িয়ে নেওয়ার আশা করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘ব্রিগেড সমাবেশের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সর্ব স্তরের সংগঠনে। এই দম ধরে রাখতে হবে।’’
সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যুব ও ছাত্র নেতৃত্বের অনেককেই প্রার্থী করা হয়েছিল। তবে বিধানসভা ভোটে আসনের সংখ্যা বেশি থাকে, সুযোগও সেখানে বেশি। লোকসভা ভোটে সুযোগ সেই তুলনায় কম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘লোকসভার লড়াইয়ে যথাসম্ভব তরুণ মুখকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা হবে। মানুষ তরুণ প্রজন্মের উপরে যে ভরসা রাখছেন।’’
ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতারা বলছেন, সিপিএমের সমাবেশে ভিড় হলেও তারা ভোট পায় না। আর বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ, তৃণমূলের সঙ্গে বামেদের ‘রাজ্যে কুস্তি, দিল্লিতে দোস্তি’। তবে ঘরোয়া আলোচনায় দুই শিবিরের নেতৃত্বের একাংশই মেনে নিচ্ছেন যে, বামেরা হারানো ভোটের উল্লেখযোগ্য অংশ ফিরে পেলে অনেক আসনের অঙ্কই ওলট-পালট হতে পারে। বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা অনুপম হাজরা সোমবার প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছাড়া, আড়ম্বরের চাকচিক্য ছাড়া এমন একটা ব্রিগেড হয়ে গেল। তার মানে সিপিএমকে নিয়ে আবার ভাবতে হবে। ভেবে দেখতে হবে মানুষ কী চাইছেন। আমাদের দলেরও আত্মসমীক্ষা করা উচিত।’’
সিপিএমের পরবর্তী নজর এখন ছাত্র সমাবেশে। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে মালদহে আগামী ২৪ জানুয়ারির সমাবেশে ছাত্র নেতৃত্বের পাশাপাশিই থাকার কথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম, সুজনের।