ফাইল চিত্র।
দুই প্রাক্তন মন্ত্রীকে নিয়ে বিড়ম্বনা। তবে দু’জনের ক্ষেত্রে পৃথক পথেই সম্ভবত হাঁটতে চলেছে সিপিএম। গড়বেতার প্রাক্তন বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা। আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী এবং রায়দিঘির প্রাক্তন বিধায়ক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে অবশ্য কথা বলবে দল।
একটি পোর্টালে সুশান্তবাবুর ধারাবাহিক লেখায় দলীয় নেতৃত্বের প্রতি বিষোদগার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল আগেই। সেই ধারাবাহিক লেখার সঙ্কলন বই আকারে প্রকাশিত হওয়ার পরে সুশান্তবাবু আবার একটি পোর্টালে কলম ধরে দলীয় নেতৃত্বকে নানা প্রশ্নে কাঠগড়ায় তুলছেন বলে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বিগত বৈঠকে সরব হয়েছিলেন একাধিক সদস্য। তার প্রেক্ষিতে আলিমুদ্দিনে ডেকে প্রাক্তন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু অন্য ‘শৃঙ্খলাভঙ্গে’র কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্বের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, সেই কারণেই শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে সুশান্তবাবুকে।
বাম সরকার বিদায়ের নির্বাচনেও গড়বেতা থেকে জিতেছিলেন সুশান্তবাবু। তবে তার পরে কঙ্কাল-কাণ্ডের মামলায় আদালতের নির্দেশের জেরে জেলায় ঢোকা বারণ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। অনুমতি নিয়ে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে যেতে হত তাঁকে। সেই ব্যবহারিক সমস্যাকে সামনে রেখেই বিগত জেলা সম্মেলনে তাঁকে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলী থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়। তবে এখনও তিনি জেলা কমিটির সদস্য। পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, জেলায় ঢুকতে না পারলেও সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের (বাঁকুড়া জেলা) যদুভট্ট মঞ্চে নিজের পুরনো এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সুশান্তবাবু। তাঁদের মতে, জেলা নেতৃত্বকে না জানিয়ে এমন বৈঠক ‘উপদলীয় কার্যকলাপে’র সামিল এবং অবশ্যই শৃঙ্খলাভঙ্গ। এই কারণেই প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চায় জেলা সিপিএম। সুশান্তবাবুর সঙ্গে মঙ্গলবার অবশ্য চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
আলিমুদ্দিনে এ দিন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে ঠিক হয়েছে, জেলা সংক্রান্ত শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার জেলা কমিটিকেই দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৩-৪ অগস্ট পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির বৈঠকে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও উপস্থিত থাকবেন। আর একটি টিভি চ্যানেলে কান্তিবাবু মন্তব্য করেছিলেন, বাম আমলের শেষ দিকেও কাটমানি নেওয়া হত পঞ্চায়েত স্তরে। সেই মন্তব্যে যে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন দলের দুই রাজ্য নেতা। কান্তিবাবু এখনও রাজ্য কমিটির সদস্য।