—প্রতীকী ছবি।
গণ-প্রতিরোধের উপরে ভরসা করেই এ বার পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে নেমেছে সিপিএম। তার অঙ্গ হিসেবে এ বার ‘পাহারায় পাবলিক’ কর্মসূচিকেও কাজে লাগাতে চাইছে তারা। ভোটে ‘বেনিয়ম’ মোকাবিলায় ওই ব্যবস্থার মাধ্যমেই স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে তথ্য চাইছে সিপিএম। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এই উদ্যোগকে কটাক্ষই করছে। তাদের প্রশ্ন, মানুষ কমিশনে না জানিয়ে সিপিএমের কাছে অভিযোগ জানাতে যাবেন কেন!
রাজ্য জুড়ে ব্লক এবং পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতির তথ্য মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করার লক্ষ্যে সিপিএম শুরু করেছিল ‘পাহারায় পাবলিক’ কর্মসূচি। এ বার তাদের ঘোষণা, নির্বাচনের বিধিভঙ্গ বা ভোটের দিন গোলমাল, ভোট লুট সংক্রান্ত যে কোনও অভিযোগের তথ্য মোবাইলে ‘পাহারায় পাবলিক’-এর নির্দিষ্ট ব্যবস্থায় জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। তথ্য পেলে তা প্রাথমিক ভাবে যাচাই করে সিপিএম নেতৃত্ব জানাবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। যেখানে প্রয়োজন, দলের তরফেও লোকজন পৌঁছে যাবেন। এই ঘোষণা করে মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মদতে ভোট লুটের অপচেষ্টা ও নির্বাচনী বিধিভঙ্গের যে কোনও তথ্য সাধারণ মানুষ আমাদের এই ফর্মের মাধ্যমে জানাতে পারবেন। মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার লড়াইয়ে বুথ আগলাবেন মানুষই। এ বার পাহারায় পাবলিক।’’ অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে সেলিম জানিয়েছেন।
তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ নিত, তা হলে আজ আমাদের এই কাজ করতে হত না!’’ তিনি এ দিন জানিয়েছেন, অভিযোগ জমা পড়ার পরে প্রাথমিক ভাবে তার সত্যতা যাচাই করা হবে। তার পরে অভিযোগের প্রকার ভেদ অনুযায়ী আইনি, প্রশাসনিক, চিকিৎসা সংক্রান্ত এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিশন এবং রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের ভূমিকারও কড়া সমালোচনা করেছেন সেলিম। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপাল যে ভাবে নানা জায়গায় ছুটে যাচ্ছেন, সেটা তাঁর কাজ নয়। গণতন্ত্রের উপরে যে আক্রমণ চলছে, তা আটকানোর কোনও কাযর্করী ব্যবস্থা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘হত্যা হয়ে যাওয়ার পরে তিনি ধূপ জ্বালতে যাবেন, এটা রাজ্যপালের কাজ হতে পারে না!’’ পাশাপাশিই শাসক দলের বাহিনীর প্রতি হুঁশিয়ারির সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দাবি, ‘‘মানুষ এ বার ভোট লুট আটকাতে মরিয়া।’’
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘এ হল গরুর গাড়ির হেডলাইট! লোকসভায় নেই, বিধানসভায় নেই। এমনকি, পঞ্চায়েতের কোথাও থাকার আশা নেই। ওদের কাছে অভিযোগ কেন যাবে! অভিযোগ থাকলে কমিশন দেখবে।’’