—প্রতীকী ছবি।
দু’দশক আগে শেষ বার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন হয়েছিল কলকাতার বাইরে। তাও সেটা হয়েছিল কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে। এ বার ‘রাজনৈতিক সঙ্কটে’ থাকা সিপিএম রাজ্য সম্মেলন কলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে গেল হুগলিতে। শুক্রবার সিপিএমের এক দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই রাজ্য সম্মেলনের নির্ঘণ্ট চূড়ান্ত হয়েছে। পরের বছর হুগলিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন হবে ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি।
তবে, হুগলির কোথায় হবে তা চূড়ান্ত করেনি আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এলাকা চয়নের দায়িত্ব ছাড়া হয়েছে জেলা নেতৃত্বের উপর। রাজ্য সম্মেলন মানে সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঁচশোর বেশি প্রতিনিধি যোগ দেবেন। আসবেন দিল্লির নেতারাও। তাঁদের থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত করার মতো পরিকাঠামো যে এলাকায় রয়েছে এবং সম্মেলন করার জন্য প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে যেখানে সেই এলাকাতেই রাজ্য সম্মেলন করতে চায় জেলা সিপিএম।
সিপিএমের সাংগঠনিক স্তরে কৌতূহল ছিল জেলা এবং শাখা কমিটির মধ্যে স্তর বৃদ্ধি পাবে কি না। উল্লেখ্য, অতীতে সিপিএমের সাংগঠনিক কাঠামোয় জেলা ও শাখা কমিটির মধ্যবর্তী জায়গায় জ়োনাল এবং লোকাল কমিটি ছিল। ২০১৭ সালেই সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসে তা বদলে দেওয়া হয়েছিল। লোকাল এবং জ়োনাল কমিটি তুলে দিয়ে জেলা ও শাখার মাঝখানে সিপিএমের একটাই কমিটি ছিল— এরিয়া কমিটি। সেই সময় সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য ছিল, যত কমিটি থাকবে তত বেশি মিটিং করতে হবে। এই ‘আমলাতন্ত্র’ থেকে দলকে মুক্ত করতে চেয়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু তা কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে তা নিয়ে সিপিএমের অন্দরেও প্রশ্ন রয়েছে। ঘটনাচক্রে, সিপিএম যখন এই সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাস করেছিল তখনও রাজ্য বিধানসভায় কাস্তে হাতুড়ি তারার প্রতিনিধি ছিলেন। লোকসভাতেও শূন্য হয়ে যায়নি। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলা এখন ‘সিপিএম শূন্য’। পরিবর্তিত সেই পরিস্থিতিতেই দলের একাংশের দাবি ছিল পুরনো কাঠামো অর্থাৎ, লোকাল এবং জ়োনাল কমিটি ফিরিয়ে আনা হোক। সূত্রের খবর, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট অনেক আলোচনা করেও তাতে সিলমোহর দেয়নি। তবে, এলাকার ভিত্তিতে এরিয়া কমিটির বিভাজন, দলীয় সদস্য সংখ্যার ভিত্তিতে কমিটির সদস্য সংখ্যা ঠিক করা ইত্যাদি বিষয়ে পুরনো কিছু সিদ্ধান্ত শিথিল করেছে। ফলে বিভিন্ন এলাকায় এরিয়া কমিটির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এবং সেই কমিটিতে ঠাঁই পাওয়ার লোকজনের সংখ্যাও বৃদ্ধি করার বিষয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট একটা রাস্তা খোলা রাখতে চেয়েছে। পরবর্তীকালে বিভিন্ন পরামর্শকে এক জায়গায় করে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে, কোনও স্তরেই নতুন অন্তর্ভূক্তি বা অবসর নেওয়ার বিষয়ে বয়সের যে মাপকাঠি ছিল তা অপরিবর্তিত রাখতে চাইছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।