মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দলের নতুন প্রজন্মের মুখ হিসেবে তিনিই এখন সামনে। তাঁদের সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ হয়েছে। আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদী আন্দোলনেও গোড়া থেকে সক্রিয় তিনি। যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে আসন্ন রাজ্য সম্মেলন থেকে আরও সামনে এগিয়ে দিতে চাইছে সিপিএম। রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে সমাবেশে প্রকাশ কারাটের পাশাপাশি মুখ্য বক্তা হিসেবে এ বার দেখা যেতে পারে মীনাক্ষীকেও।
কলকাতার বাইরে বেরিয়ে সিপিএম এ বার দলের রাজ্য সম্মেলন জেলায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হুগলি জেলার ডানকুনিতে আগামী ২২ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে সিপিএমের ২৭তম রাজ্য সম্মেলন। প্রথমে রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে সমাবেশের বিশেষ পরিকল্পনা ছিল না। দলীয় সূত্রের খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, সম্মেলন শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি ডানকুনিতে রাজ্য সমাবেশ হবে। মূল বক্তা তালিকায় সেখানে থাকতে পারেন চার নেতা-নেত্রী। সিপিএমের পলিটব্যুরো কো-অর্ডিনেটর কারাট, রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, জনজাতি অংশের প্রতিনিধি দেবলীনা হেমব্রম এবং তরুণ প্রজন্মের তরফে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী। সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের সমাবেশের মঞ্চে কারাটের পাশে যুব সংগঠনের নেত্রীর স্থান পাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই বাম সূত্রের ব্যাখ্যা।
সিপিএমের সংগঠনের নিয়ম মেনে রাজ্য সম্মেলন থেকে গড়া হবে দলের নতুন রাজ্য কমিটি। আর পার্টি কংগ্রেসের পরে গঠিত হবে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। দলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত, সম্মেলনের পরে এ বার সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বেও দেখা যেতে পারে মীনাক্ষীকে। দলের তরফে যুব সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, স্বয়ং রাজ্য সম্পাদক সেলিম নতুন সময়ের উপযোগী এবং প্রান্তিক জনতার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠার জন্য গড়ে-পিটে নিচ্ছেন মীনাক্ষীকে। এই বছরেরই শেষ দিকে ডিওয়াইএফআইয়ের পরবর্তী রাজ্য সম্মেলন হওয়ার কথা। সব পরিকল্পনামাফিক চললে এবং মীনাক্ষীকে দলের রাজ্য সংগঠনে নিয়ে আসা হলে ডিওয়াইএফআইয়ের সেই সম্মেলনে তিনি যুব সংগঠন থেকে অব্যাহতি নিতে পারেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘দলের বিভিন্ন স্তর এবং বাইরে বামমনস্ক মানুষ যেমন চাইছেন, সেই পরিস্থিতি মাথায় রেখেই সংগঠনে যা পরিবর্তন করার, করা হবে।’’
সব জেলা, গণ-সংগঠন ও ব্যক্তি মিলিয়ে প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি নিয়ে ডানকুনিতে হতে চলেছে রাজ্য সম্মেলন। আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ানো এবং রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের রূপরেখা তৈরির লক্ষ্যে এই সম্মেলনকে কাজে লাগাতে চাইছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক সেলিমের কথায়, ‘‘নতুন মানুষ, নতুন প্রজন্ম লাল ঝান্ডার তলায় জড়ো হচ্ছে, জেলা সম্মেলনে উৎসাহ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিমেরু ভাষ্য ভেঙে শ্রেণি আন্দোলন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কাজের প্রশ্নে লড়াই জোরদার করা আমাদের লক্ষ্য। বিজেপি ধর্মাশ্রিত রাজনীতি করে এ রাজ্যে ভোট-ব্যাঙ্ক তৈরি করছে। এই সময়ে বামপন্থীদের অনেক বেশি এককাট্টা হতে হবে। রাজ্য সম্মেলনেই ঠিক হবে, ২০২৬-এর প্রস্তুতিতে আমরা কোন পথে এগোব।’’