প্রতীকা ছবি।
রাজ্য জুড়ে অগাধ সম্পত্তি এবং বেআইনি অস্ত্রের কারবার কী ভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে, তার খতিয়ান তুলে ধরতে এ বার সংগঠিত ভাবে আসরে নামছে সিপিএম। রামপুরহাটে তৃণমূল কংগ্রেসের নিহত উপ-প্রধান ভাদু শেখের বাড়ির ছবি প্রকাশ্যে নিয়ে আসার পরে ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ হওয়ার নমুনা পেশ করতে সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সিপিএমের প্রচার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সেই কর্মসূচিকেই এ বার সংগঠিত চেহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যার নাম দেওয়া হচ্ছে ‘পাহারায় পাবলিক’। শাসক দল তৃণমূল অবশ্য সিপিএমের এমন উদ্যোগকে কটাক্ষই করছে।
স্থানীয় সূত্রে তথ্য সংগ্রহ করে পঞ্চায়েত বা পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের প্রাসাদোপম বাড়ির ছবি সামনে আনতে শুরু করেছে সিপিএম। তারই পাশাপাশি এখন তারা জেলায় জেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের এই তথ্য তুলে ধরার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। তার জন্য তৈরি হয়েছে ফর্ম। সেই ফর্ম পূরণ করে নির্দিষ্ট আইডি-তে ই-মেল করলে প্রেরকদের নাম-ঠিকানা গোপন রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মতে, ‘‘একটা ভাদু শেখ নয়, গ্রামে গ্রামে এখন সাম্রাজ্য তৈরি হয়েছে। কী তাদের আয়ের উৎস? টাকার বখরা অপরাধ বাড়াচ্ছে, জড়িয়ে যাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। আমরা কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করি না। মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে নিয়ে রাজ্যপালের মাধ্যমে শাসন চালালেই সমাধান হয়ে যাবে, আমরা মনে করি না। সচেতন মানুষকে নিয়েই এই নৈরাজ্যের মোকাবিলা করতে হবে।’’
সিপিএমের ডিজিটাল মিডিয়া শাখার তরফে বুধবার বলা হয়েছে, ‘রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে প্রতিটি এলাকায় ভলান্টিয়াররা এগিয়ে আসুন। পশ্চিমবঙ্গের বুকে দ্বিতীয় রামপুরহাট হওয়ার আগে, আপনার অঞ্চলে ভাদু শেখের মতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া তৃণমূল নেতাদের চিহ্নিত করতে, এই ফর্মটি ফিল-আপ করে জমা দিন। আপনার নাম ও অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সম্পূর্ণ ভাবে গোপন ও সুরক্ষিত থাকবে। রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতাদের তোলাবাজি, বেলাগাম দুর্নীতি রুখে দিতে, বে-আইনি অস্ত্র কারবারে লাগাম টানতে সাহায্য করুন’।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘সিপিএম আগে ৩৪ বছরে নিজেদের নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ি-গাড়ি-সম্পত্তির হিসেব দিক! আজ তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে নিজেদের কৃতকর্ম ভোলানো যাবে?’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর আবার পাল্টা দাবি, ‘‘সব গ্রামে, প্রত্যেকটি এলাকায় দু-তিন-চার জন, বাইক, বাড়ি, জমি সব ব্যাপার তাদের। তারা ছাড়া কেউ কিছু করতে পারবে না। এই ব্যবস্থা কখনও ছিল না! এই সব তথ্যই আমরা এক জায়গায় আনতে চাইছি। এত বেআইনি সম্পদ আছে বলেই সিবিআই অথবা ইডি সুযোগ পায় তৃণমূলকে ডাকার। বাকিদের তো এ ভাবে সুযোগ পায় না।’’