বিনা বাধায় ব্রিগেড প্রস্তুতি বামেদের

আজ, রবিবার ব্রিগেডে বামেদের সভা। সভার সমর্থনে গত কয়েকদিন ধরে জেলার রাস্তায় বেরিয়েছে মিছিল, করা হয়েছে পথসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৫
Share:

সিপিএম সূত্রের খবর, রবিবারের সভায় নন্দীগ্রাম থেকে ছ’টি বাস যাচ্ছে বাম সমর্থকদের নিয়ে। ছবি: সংগৃহীত।

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সম্প্রতি সভা করেছেন কাঁথিতে। সেই সভার জন্য বাস ভাড়া করতে তাঁদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভার পর গাড়ি ভাঙচুর এবং দলীয় কর্মীদের মারধরের অভিযোগও উঠেছিল তৃণমূল কর্মীদের উপরে।

Advertisement

আজ, রবিবার ব্রিগেডে বামেদের সভা। সভার সমর্থনে গত কয়েকদিন ধরে জেলার রাস্তায় বেরিয়েছে মিছিল, করা হয়েছে পথসভা। জেলা থেকে কর্মীদের সভায় নিয়ে যেতে আগে থেকে ভাড়া করা হয়েছে বাস, ট্রেকার। কিন্তু সব কিছুই প্রায় হয়েছে ‘বিনা বাধায়’। যা দেখে বিজেপি’র কটাক্ষ, তাদের ঠেকাতে বামেদের কার্যত ‘সাহায্য’ করছে তৃণমূল।

সিপিএম সূত্রের খবর, রবিবারের সভায় নন্দীগ্রাম থেকে ছ’টি বাস যাচ্ছে বাম সমর্থকদের নিয়ে। শুধুই নন্দীগ্রাম নয়, তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে এবার রেকর্ড সংখ্যক বাম কর্মী-সমর্থক ব্রিগেড সমাবেশে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন সিপিএম জেলা নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম, খেজুরি-সহ জেলার সব এলাকা থেকে বাস, ট্রেকারে, ট্যাক্সিতে বেশির ভাগ সমর্থকেরা ব্রিগেডে যাবেন। এছাড়া, হলদিয়া, দিঘা, পাঁশকুড়া, মেচেদা এলাকার কর্মীরা ট্রেনে যাবেন। সব মিলিয়ে জেলা থেকে কমপক্ষে ৪০ হাজার কর্মী-সমর্থক ব্রিগেডে যাবেন।’’

Advertisement

সিপিএম সূত্রের খবর, ব্রিগেড সমাবেশের জন্য সিপিএম জেলা জুড়ে মোট ২৭০টি বাস, ১৫৫টি ট্রেকার ভাড়া করেছে। এছাড়া, শরিক সিপিআই, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ২১টি বাস ভাড়া করেছে। জেলার বিভিন্ন রুটে চলা ওই সব বাস ভাড়ায় পেতে কোনও সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। নিরঞ্জনের কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূল আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে এবং প্রচারে বাধা দিয়েছিল। তবে এবার ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনের প্রচার পর্বে সে রকম কিছু ঘটেনি। পথ সভা এবং মিছিলের জন্য প্রশাসনের অনুমতি পেতেও অসুবিধা হয়নি।’’

বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে যাওয়ার জন্য প্রায় ৩০০ বাস ভাড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে তৃণমূল প্রভাবিত বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন। তিনি বলেন, ‘‘ব্রিগেডের সভার জন্য বামেরা অনেক আগে থেকেই বাস ভাড়া করেছে। এ নিয়ে দলীয়ভাবে কেউ নিষেধ করেননি।’’

এই বিষয়টি নিয়েই বিজেপি’র জেলা নেতৃত্ব কটাক্ষ করছেন। প্রশ্ন ছুড়েছেন তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে। বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘ময়নায় আমাদের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সভার প্রশাসনিক অনুমতি পাওয়া যায় না। কাঁথিতে অমিত শাহের সভার প্রশাসনিক অনুমতি পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বেগ পেতে হয়েছে। সভায় যাওয়া বিজেপি সমর্থকদের উপর আক্রমণ করেছে, গাড়ি ভেঙেছে তৃণমূল। অথচ বামফ্রন্ট অবাধে কর্মসূচি পালন করছে। বিজেপি’কে ঠেকাতেই নন্দীগ্রাম-সহ জেলায় সংগঠনহীন সিপিএমের সভা-কর্মসূচি পালন করতে সাহায্য করছে তৃণমূল।’’

উল্লেখ্য, মাত্র এক বছর আগেও নন্দীগ্রামের বাজারে সভা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বকে। সেই নন্দীগ্রাম - ১ ব্লকের ভেকুটিয়া ইপ্তাহ দুয়েক আগে কার্যালয় খুলেছে সিপিএম।

বিজেপির কটাক্ষ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম -১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে সিপিএম, বিজেপি কারও সভা করতে বাধা দেওয়া হয় না। প্রশাসনিক নিয়ম মেনে এখানে সবাই সভা করতে পারে। সিপিএমের সভায় আগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ বা এখন ওদের কর্মসূচি পালনে সাহায্য করার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement