State News

রাজ্যসভায় মনোনয়ন শুরু, জোটে ক্ষোভ সিপিএমের ঘুমে

ইয়েচুরি প্রার্থী হলে কোনও আপত্তি নেই বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্বের।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০২:৪৯
Share:

ছবি: পিটিআই।

রাজ্যসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও। কিন্তু প্রার্থী দেওয়া নিয়ে জট এখনও কাটল না বিরোধী শিবিরে!

Advertisement

জোটের জোরে এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভার পঞ্চম আসনটি ঘরে তোলার অঙ্ক কষছে বাম ও কংগ্রেস। কিন্তু তার জন্য জরুরি কাজ যে প্রার্থী ঠিক করা, তা-ই নিয়ে এমন টালবাহানায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে দুই শিবিরেই। বঙ্গ সিপিএম ওই আসনের প্রার্থী হিসেবে একমাত্র সীতারাম ইয়েচুরির নাম প্রস্তাব করেই পলিটব্যুরোর কাছে পাঠিয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও দিল্লি থেকে সিলমোহর নিয়ে আসেনি। সিপিএম যত কালক্ষেপ করবে, তার মধ্যে পঞ্চম আসনের জন্য কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও বোঝাপড়া হয়ে যায় কি না— এই আশঙ্কায় রয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। আলিমুদ্দিনের অন্দরে একই আশঙ্কা থাকলেও তা কাটাতে তাদের তরফে বিশেষ কোনও তৎপরতা চোখে পড়ছে না!

ইয়েচুরি প্রার্থী হলে কোনও আপত্তি নেই বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্বের। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র প্রকাশ্যেই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস নিজেদের কোনও প্রার্থীর নাম সুপারিশও করেনি এআইসিসি-র কাছে। কিন্তু অধীর, সোমেন থেকে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান— সকলেই বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ সিপিএমের গড়িমসিতে। গত দু’বার ইয়েচুরির নাম তারা প্রস্তাব করা সত্ত্বেও সিপিএম রাজি না হওয়ায় কংগ্রেসকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এ বার পুরভোটে জোট গড়ে লড়ার জন্য জেলায় জেলায় বাম ও কংগ্রেস প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার মধ্যে রাজ্যসভার ভোট ঘিরে দু’পক্ষের সমঝোতায় চিড় ধরলে পুরভোট এবং তার পরে বিধানসভা ভোটের জোটের প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা।

Advertisement

আরও পড়ুন: কারখানার প্রশংসায় লুক্সেমবার্গের রাষ্ট্রদূত

রাজ্যসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুক্রবার তৃণমূল পরিষদীয় দলের তরফে মনোনয়নপত্র তুলে রাখা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনোনয়ন প্রক্রিয়া ফুরনোর আগে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করলেও তৃণমূলের কোনও সমস্যা নেই। কারণ, অন্তত চার আসনে অঙ্কের নিরিখে তাদের জয় কার্যত নিশ্চিত। কিন্তু সিপিএম ও কংগ্রেসকে একে অপরের উপরে নির্ভর করতে হবে। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা তো ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকেই জানি বিধানসভায় কার কত শক্তি। তা হলে এখন প্রার্থী ঠিক করতে এত সময় লাগবে কেন?’’

সিপিএমের আনুষ্ঠানিক পলিটব্যুরো বৈঠক দিল্লিতে ডাকা আছে ১৪ ও ১৫ মার্চ। কিন্তু রাজ্যসভার মনোনয়নের শেষ দিন ১৩ তারিখ। রাজ্য সিপিএমের বড় অংশের আশা ছিল, এ রাজ্য থেকে দলের দুই পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বা মহম্মদ সেলিম দিল্লি গিয়ে প্রার্থীর বিষয়ে ফয়সালা করে আসবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও উদ্যোগ না দেখে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে আলিমুদ্দিনের অন্দরেও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘সাধারণ সম্পাদক বলে সীতারামকে যদি প্রার্থী করতে একান্তই অসুবিধা থাকে, তা হলে দেখতে হবে যাতে বাম ও কংগ্রেসের বোঝাপড়া অটুট থাকে। তখন দু’পক্ষের সমর্থনে নির্দল মুখ দিতে হবে বা কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করতে হবে। কংগ্রেসকে তৃণমূলের দিকে ঠেলে দেওয়া তো কাজের কথা হতে পারে না! কিন্তু কোনও বিকল্পই এখনও ঠিক হল না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement