CPM State Conference

বাংলার পার্টিতে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি কম, শনিবার বলেন কারাট, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিলেন সেলিম

রাজ্য সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রকাশ কারাট কেরলের তুলনা টেনেছিলেন। কেরলে সিপিএম সদস্যদের মধ্যে ২২ শতাংশের বয়স ৩১ বছরের নীচে। কেন বাংলায় সেই হার কম সেই প্রশ্ন তোলেন কারাট।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৫
Share:
(বাঁ দিকে) প্রকাশ কারাট। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) প্রকাশ কারাট। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।

দলের ছাত্র-যুব আন্দোলনে তেজ বাড়লেও বাংলার পার্টিতে তরুণদের অন্তর্ভুক্তির হার ভাল নয়— শনিবার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রকাশ কারাট। রবিবার মহম্মদ সেলিমের সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ উঠতেই দলীয় কাঠামোয় প্রক্রিয়াগত দীর্ঘসূত্রিতা এবং একাংশের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করলেন দলের রাজ্য সম্পাদক। সেলিম বলেন, এ বার থেকে যাতে প্রক্রিয়াটি গুছিয়ে করা যায়, সে ব্যাপারেই রূপরেখা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

Advertisement

বঙ্গ সিপিএমের সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে সিপিএম পলিটব্যুরোর সমন্বয়ক কারাট কেরলের তুলনা টেনেছিলেন। কেরলে সিপিএম সদস্যদের মধ্যে ২২ শতাংশের বয়স ৩১ বছরের নীচে। কেন বাংলায় সেই হার কম সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কারাট। এ প্রসঙ্গে সেলিমের জবাব, ‘‘কমিউনিস্ট পার্টিতে মিস্‌ডকল দিয়ে সদস্য হওয়া যায় না। উৎসাহীদের প্রশিক্ষিত করা, তাঁদের নিয়ে আসা এবং উন্নীত করার একটা প্রক্রিয়া রয়েছে।’’ দীর্ঘসূত্রিতা থাকলেও অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যে অনেক জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে, তা-ও মেনে নিয়েছেন সেলিম।

সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জানিয়েছেন, দলে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে মহিলাদের হার আগের তুলনায় বেড়েছে। এ বার তরুণদের বিষয়ে জোর দেওয়ার হবে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের দাবি, গত তিন বছরে দলে অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। সূত্রের খবর, সেলিম যে প্রতিবেদন পেশ করেছেন তার ৪১ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন বছরে সারা রাজ্যে ২৫ হাজার জনের পার্টি সদস্যপদ খারিজ করেছে দল। তবে পরের পৃষ্ঠায় দেওয়া তথ্যপঞ্জিতে দেখা যাচ্ছে, সিপিএমের পার্টি সদস্যপদ যত কমেছে, তার চেয়ে অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা বেশি। যাকে অন্ধকার সুড়ঙ্গে একচিলতে আলো বলে অভিহিত করছেন দলের অনেকে।

Advertisement

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের পুনর্নবীকরণ পর্বে ১১ হাজার সদস্যপদ খারিজ হয়েছিল। মোট সদস্যসংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৫৪ হাজার। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের পুনর্নবীকরণে ৫,৮০০-র মতো সদস্যপদ খারিজ হলেও মোট সদস্যসংখ্যা বেড়ে হয় ১ লক্ষ ৫৭ হাজার। অর্থাৎ, অন্তর্ভুক্তি হয়েছে বেশি। ২০২৪ সালে সদস্যপদ খারিজ হয় ৮,৪০০ জনের। তবে মোট সদস্যসংখ্যা দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৫৮ হাজারে।

সেলিম রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পরে তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার দেওয়াকে আগ্রাসী ভাবে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছেন দলে। পার্টির অনেকের বক্তব্য, এই বৃদ্ধির হার তারই প্রতিফলন। যদিও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, এর মধ্যে কয়েক হাজারের ক্ষেত্রে এমনও হয়েছে, যাঁরা সদস্যপদ পাওয়ার এক বছরের মধ্যে তা ছেড়েও দিয়েছেন। যা ‘উদ্বেগজনক’।

সোমবার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে বিশেষ অধিবেশন হবে। সূত্রের খবর, পরের বছর বাংলার বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা করবে তারা। ধারাবাহিক নির্বাচনী বিপর্যয় প্রসঙ্গে সেলিম এ দিন বামেদের বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থের ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন। ভারতের ভোটে মার্কিন অনুদান নিয়ে যখন জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড়, তখন সেলিম অভিযোগ করেন, ২০১১ সালেও বাংলায় এনজিওর মাধ্যমে বিদেশি টাকা এসেছিল। সেলিম বলেন, ‘‘বিদেশের টাকা চিট ফান্ডের নাম করে এ রাজ্যে ঢুকেছে তৃণমূলের ঘরে। সেই টাকা গুন্ডা কিনতে, ভোট লুটের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। মানুষের ভোট প্রভাবিত করার জন্য বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়েই বিদেশি টাকা ব্যবহার করেছে। তাই তারা একে অপরকে দোষারোপ করে না।’’ তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগকে ‘অবান্তর অজুহাত’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘একজন পরীক্ষার্থী বার বার শূন্য পেলে তাঁর নানাবিধ বিষয় মনের মধ্যে কাজ করে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক পরিযায়ী প্রার্থী হয়ে ঘুরছেন আর হারছেন। তার ফলে এ সব অবান্তর যুক্তি দিচ্ছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement