আন্দোলন ছা়ড়া সংগঠন হয় না। আবার সংগঠন ছাড়া আন্দোলনও হয় না। একে অপরের পরিপূরক এই দুই জরুরি লক্ষ্যের দিকে নজর দেওয়ার জন্য শারদোৎসবের মরসুমে ডাক দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকর সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর বক্তব্য, শুধু বৈঠকে তাত্ত্বিক আলোচনায় এই কাজ হবে না। বাস্তবের মাটিতে বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠন তৈরি করেই লড়াই করতে হবে।
দলের দৈনিক মুখপত্রের এ বারের শারদসংখ্যায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক লিখেছেন, ‘সংগ্রামের মধ্য দিয়েই সংগঠন গ়়ড়ে ওঠে, সংগ্রাম বিমুখ হয়ে সংগঠন গড়ে তোলা যায় না। আবার সংগঠন ছাড়া কোনও সংগ্রামও গড়ে তোলা যায় না। তাই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বুথ স্তর পর্যন্ত একটি মজবুত সংগঠন গ়ড়ে তোলার দিকে আমাদের অপরিসীম গুরুত্ব দিতে হবে’। কয়েক মাস আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘নজিরবিহীন সন্ত্রাসে’র কথা বলেও বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলা গিয়েছে, তাকে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবেই দেখছেন সূর্যবাবুরা। কর্মী-সমর্থকদের প্রতি তাঁদের বক্তব্য, এক দিকে শারীরিক হামলা এবং অন্য দিকে মনোজগতে আক্রমণ— এই দুইয়ের মোকাবিলা করে লড়াইয়ের ময়দানে থাকতে হবে। লোকসভা নির্বাচনের আগে বেহাল সংগঠনকে চাঙ্গা রাখাই যে সিপিএম নেতৃত্বের বড় চিন্তা, সূর্যবাবুর পুজোর লেখাতেও তা স্পষ্ট।
রাজ্য জু়ড়ে বিভিন্ন বাম সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে আছে। সে সবের উল্লেখ করে সূর্যবাবু বোঝাতে চেয়েছেন, তৃণমূল আর বিজেপির মেরুকরণের আবহে বামেদের কর্মসূচি প্রচারে থাকছে না। কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দল বাক্যুদ্ধ চালিয়ে তাদের ‘গোপন বোঝাপড়া’কে আড়াল করছে বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁদের কাজ সহজ নয়, মেনেই নিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। নিজেদের কর্তব্য নির্ধারণ করতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্বে হবে না, সাংগঠনিক নেতৃত্বও চাই। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক নেতৃত্বকে সমান তালে এগোতে হবে। শুধু তত্ত্বজ্ঞানে হবে না। তত্ত্বকে প্রয়োগ ও পরীক্ষা করতে হবে লড়াইয়ের ময়দানে’। তত্ত্ব ও তার প্রয়োগের ব্যবহারিক কাজ একসঙ্গে চালানো ছাড়া স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের অন্য পথ নেই বলে সিপিএমের এই পলিটব্যুরো সদস্যের মত।