সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পর্যন্ত সিপিএমের পদযাত্রা।—নিজস্ব চিত্র।
যে দিকেই চোখ যায়, শুধু লাল পতাকা!
গত ১১ বছরে সিঙ্গুরের মাটিতে এত লাল পতাকা দেখা যায়নি। বুধবার যা দেখা গেল রাজ্যে শিল্প ও কাজের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পর্যন্ত সিপিএমের পদযাত্রাকে ঘিরে। যার জেরে পুলিশকে এক সময়ে বন্ধ করে দিতে হয় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কলকাতামুখী ‘লেন’! সিপিএমের দাবি, পদযাত্রার সূচনায় অন্তত ৮ হাজার মানুষ যোগ দেন। দু’দিনের এই পদযাত্রায় সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে সিপিএম নেতাদের আশা। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্যামল চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এটা বামফ্রন্টের মিছিল নয়, সিপিএমেরও নয়। শুধু সিপিএমের দু’টো গণসংগঠনের ডাকে এত মানুষ এসেছেন। এটা ট্রেলর, পিকচার আভি বাকি হ্যায়!’’
সিপিএমের কৃষকসভা ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের উদ্যোগে এই পদযাত্রা আজ, বৃহস্পতিবার হাওড়া সেতু পেরিয়ে কলকাতায় ঢুকবে। পদযাত্রা শেষে সমাবেশ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। পদযাত্রার সূচনা করে এ দিন সকালে কৃষকসভার সর্বভারতীয় সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘বর্তমান রাজ্য সরকার সিঙ্গুরে শিল্পকে শ্মশানে পাঠিয়েছে। সেই শ্মশান থেকে শিল্পের পুনরুজ্জীবনের দাবিতেই আমাদের এই অভিযান। শুধু রাজ্য নয়, কেন্দ্র সরকারও চাষিদের ধোঁকা দিচ্ছে।’’
মহারাষ্ট্রের ‘কিসান লং মার্চ’-এর আদলে এই কর্মসূচিতে শুধু হুগলি নয়, অন্যান্য জেলা থেকেও বাম কর্মী-সমর্থকেরা যোগ দিয়েছেন। সিঙ্গুরের সানাপাড়া থেকে সকালে একটি ছোট মিছিল প্রথমে রতনপুরের আলুর মোড় সেতুর কাছে আসে। সেখানে ছোট মঞ্চে মিছিলের সূচনায় হান্নান ছাড়াও কৃষকসভা ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের দুই রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার ও অমিয় পাত্র উপস্থিত ছিলেন। এক্সপ্রেসওয়ের কলকাতামুখী ‘লেন’-এ মিছিলের জন্য পুলিশ গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছিল। প্রথমে মিছিল ছিল গার্ডরেলের বাঁ দিকে। কিন্তু মিছিল বে়ড়ে যাওয়ার পরে পুলিশ ‘লেন’টি বন্ধ করে দেয়। বর্ধমানমুখী ‘লেন’ দিয়েই তখন দু’দিকের গাড়ি চলাচল করতে থাকে। রাতে স্থায়ী পদযাত্রীরা থাকবেন বালিতে। বাকিরা আজ হাওড়া স্টেশনে জড়়ো হবেন, শিয়ালদহ স্টেশন থেকেও কয়েকটি জেলার মিছিল ধর্মতলা আসবে।
সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘প্রথম দিন ডানকুনি হয়ে পদযাত্রীরা বালি পর্যন্ত যাবেন। ফের বালি থেকে বৃহস্পতিবার মিছিলের সূচনা হবে।’’