এই কার্যালয়টিই পুনরুদ্ধার করেছে সিপিএম। নিজস্ব চিত্র
‘জয় শ্রীরাম’-এর ফায়দা তুলল সিপিএম!
ওই ধ্বনি নিয়ে বিজেপির সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের কাজিয়া তুঙ্গে উঠেছে। সেই ফাঁকে স্রেফ ওই ধ্বনি দিয়ে খানাকুলের ছত্রশাল বাজারের একটি দলীয় কার্যালয় আট বছর পরে তৃণমূলের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করলেন স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীরা!
সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দাবি, গত বুধবার বিকেলে ওই কার্যালয়ের সামনে দলের কয়েক জন কর্মী-সমর্থক মজা করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে পালিয়েছিলেন। তাতেই ভয়ে কার্যালয় ছেড়ে পালান তৃণমূলের লোকজন। মাঝে বৃহস্পতিবার সেখানে কেউ আসেননি। শুক্রবার বিকেলে বিনা বাধায় তালা ভেঙে কার্যালয়ে ঢোকেন সিপিএম কর্মীরা। গ্রিলে সাঁটা তৃণমূলের প্রতীক উপড়ে ফেলা হয়। তার পরেই ওই কার্যালয়ে ফের লাল পতাকা তোলা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন, ওই ধ্বনি শোনামাত্র তৃণমূল কর্মীরা হামলার আশঙ্কায় চলে যান। খানাকুলের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বংশীবদন মৈত্রের নেতৃত্বেই কার্যালয়টি পুনরুদ্ধার হয়। বংশীবদনবাবু
বলেন, “জয় শ্রীরাম শুনলেই মুখ্যমন্ত্রীর তেড়ে যাওয়ার দৃশ্য এখন গ্রামেগঞ্জে মূল আলোচনার বিষয়। সেটা নিয়ে আমাদের ছেলেরা মজা করলেও করতে পারে। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের দর্প খর্ব হওয়ায় আমাদের ছেলেরা কার্যালয়টি খোলার জন্য তৎপর হয়।’’
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে সিপিএমের ওই কার্যালয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরই বসতে দেখতেন এলাকাবাসী। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সিপিএমের ওই কার্যালয় দখল করার কথা মানেননি। তৃণমূল নেতা তথা খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ সাদাতুল্লা ওরফে হিরা বলেন, “আমরা কোনও দলের কার্যালয় দখল করিনি। সিপিএমই এত দিন কার্যালয়টি তালাবন্ধ রেখে পুনরুদ্ধারের নাটক করছে।’’
বাম জমানায় ‘লাল দুর্গ’ হিসেবে পরিচিত ছিল গোটা আরামবাগ মহকুমা। ২০১১-তে রাজ্যে পালাবদলের পরে একে একে মহকুমার অধিকাংশ সিপিএম কার্যালয় তৃণমূল দখল করে বলে অভিযোগ। যেগুলি ‘দখল’ হয়নি, সেখানে ভয়ে সিপিএমের কেউ যান না। ছত্রশাল বাজারের পরে এ বার খানাকুলের আরও অন্তত ৬০টি দলীয় কার্যালয়ও দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে বংশীবদনবাবু জানিয়েছেন।
আরামবাগ থানা এলাকায় ‘দখল’ হওয়া ১৬টি দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে তিনটি ইতিমধ্যে পুনরুদ্ধার করেছে সিপিএম। অবশ্য সেখানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ছিল না। বিজেপিই তাদের কার্যালয় দখল করে সিপিএমের হাতে তুলে দিচ্ছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। বিজেপি অভিযোগ মানেনি।