State News

নজরে গ্রাম, বছরভর মাঠের পথে সিপিএম

সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির মাধ্যমে একশো দিনের কাজ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সাজিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৫৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা সাম্প্রদায়িক সংহতি রক্ষার দাবিতে পথে নেমে সাড়া মিলছে। এরই পাশাপাশি এ বার গ্রামীণ ভিত পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এক বছরের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে সিপিএম। এই কাজে তাদের হাতিয়ার একশো দিনের কাজ প্রকল্প।

Advertisement

সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির মাধ্যমে একশো দিনের কাজ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সাজিয়েছে সিপিএম। বাম কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলির অভিযোগ, গ্রামীণ অর্থনীতিকে একেবারে শুষে নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ৯১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ কেটে দেওয়া হয়েছে, খাদ্যশস্যের উপরে ভর্তুকি হ্রাস ধরলে সব মিলিয়ে ছাঁটা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী যে শস্যবিমার কথা বলেন, তার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ২২-২৩% মানুষ। এই অবস্থায় গ্রামে গ্রামে কাজ চেয়েও পাচ্ছেন না মানুষ। জবকার্ডের জন্য আবেদন করলে মঞ্জুর হচ্ছে না, চলছে পক্ষপাতিত্বও। এই গোটা ‘সঙ্কট’ নিরসনের দাবিতে গ্রামের মানুষকে একজোট করতে চাইছে সিপিএম। এবং সে কাজের জন্য আগামী অর্থবর্ষের শুরুতে এপ্রিল থেকে পরের বছর মার্চ পর্যন্ত কর্মসূচি সাজানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: রাজ্যসভায় সীতারামের নাম প্রস্তাব সিপিএমের

Advertisement

আপাতত গ্রামীণ এলাকার ব্লক এবং পঞ্চায়েতে চলছে কর্মশালা। সেখানে বোঝানো হচ্ছে, কেন্দ্রীয় আইন মেনে একশো দিনের কাজের কী কী অধিকার পাওয়া যায়। এর পরে একশো দিনের কাজের আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট ৪ক ফর্‌ম নিয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি যাবেন বাম কর্মীরা। সেই সঙ্গে চলবে সই সংগ্রহ। লক্ষ্য, অন্তত ৪০ লক্ষ সই সংগ্রহ করা। পঞ্চায়েতের পরে জেলাশাসকের দফতরে ঘেরাও-বিক্ষোভ হবে কাজের দাবিতে। গ্রামবাংলার এই লড়াইয়ের কথা জানাতে পুরভোটের পরে কলকাতায় বড় সমাবেশের ভাবনাও রয়েছে।

‘রেগা (একশো দিনের কাজ) বাঁচাও, রেগায় লুট বন্ধ কর’— এই ডাক দিয়ে গ্রামবাংলা জুড়ে কর্মসূচির মূল দাবি বছরে ২০০ দিন কাজ ও দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি (বাংলায় এখন ১৯১ টাকা), কাজ চাইলে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা এবং দুর্নীতি বন্ধ করা। কিন্তু এই বিপুল কাজ করার মতো সাংগঠনিক জোর কি এখন বামেদের আছে? সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্রের কথায়, ‘‘কে তৃণমূল বা কে বিজেপি সমর্থক, সে সব আমরা দেখব না। সকলের কাছে গিয়ে আমরা বলছি, একশো দিনের কাজের ফর্‌ম পূরণ করুন। আমরা বিশ্বাস করি, এই কাজ ঠিকমতো করতে পারলে গ্রামবাংলার রাজনীতির সমীকরণ বদলে দেওয়া সম্ভব।’’

এক কালে বামেদের শক্ত ভিত ছিল গ্রামই। এখন তৃণমূল যেমন সেই জায়গা নিয়ে নিয়েছে, তেমনই বিজেপি মেরুকরণের তাস খেলে পরিসর বাড়াচ্ছে। সিপিএম নেতৃত্বের মতে, হাতে থাকা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কাজ ও টাকা ‘পাইয়ে দেওয়া’র বিনিময়েই বুথে বুথে বাহিনী পায় শাসক দল তৃণমূল। রাতারাতি সেই অবস্থার বদল সম্ভব না হলেও বছরভর মাটি কামড়ে গ্রামের মানুষের মজুরির দাবিতে আন্দোলন চালাতে পারলে অন্তত ১০০টা গ্রামীণ বিধানসভা এলাকায় গণভিত পুনরুদ্ধারে এগোনো যাবে বলে তাঁদের আশা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement