কর্পোরেট কায়দায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাজের আত্মমূল্যায়ন চালু করেছিল সিপিএম। তার ভিত্তিতে এ বার রদবদল হল রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের জেলাগত দায়িত্বে। রাজ্য সম্মেলনের দেড় বছরের মধ্যে রাজ্য নেতৃত্বেদায়িত্বের এমন পুনর্বিন্যাস সচরাচর দেখা যায় না। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় এখন সম্ভাব্য সব দাওয়াই প্রয়োগ করে সংগঠনের পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা হবে। যদিও দলেরই একাংশের প্রশ্ন, নিচু তলায় সংগঠনের কোমরই যখন ভেঙে গিয়েছে, তখন শুধু ‘মনিটর’ বদলে কী আর লাভ হবে!
সিপিএমের সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যেরা বিভিন্ন জেলার দায়িত্বে থাকেন। সঙ্গে বাড়তি দায়িত্ব থাকে রাজ্য কমিটির কিছু সদস্যের। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র নোট দিয়ে জানিয়েছেন, সময়সীমা ধরে রাজ্য নেতৃত্বের কাজের পর্যালোচনা হবে বলে সাংগঠনিক প্লেনামে ঠিক হয়েছিল। সেই মর্মে রিপোর্ট জমা পড়ে রাজ্য কমিটিতে। তার ভিত্তিতেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যের জেলাগত দায়িত্বে পরিবর্তন। এর পরে রাজ্য কমিটির সদস্যদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।
সূত্রের খবর, কয়েকটি জেলায় উল্লেখযোগ্য রদবদল হয়েছে। কোচবিহারে শ্রীদীপ ভট্টাচার্যের বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুজন চক্রবর্তীকে। মালদহে শ্যামল চক্রবর্তীর পরিবর্তে মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে যৌথ ভাবে নয়া দায়িত্বে অমিয় পাত্র। বর্ধমানে মদন ঘোষের সঙ্গে খোদ রাজ্য সম্পাদক। উত্তর ২৪ পরগনার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলার সম্পাদক গৌতম দেবের সঙ্গেই দায়িত্বে বিমান বসু ও সূর্যবাবু। আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জেলা সম্পাদক সুজনবাবুর সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নেবেন বিমানবাবু ও গৌতমবাবু। দুই ২৪ পরগনাতেই জেলা সম্পাদক বদলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। উত্তরে এক প্রাক্তন যুব নেতা ও দক্ষিণে এক প্রাক্তন সাংসদ বাছাই তালিকায় আছেন। তবে সেই পরিবর্তনের সময়সীমা ঠিক হয়নি।
পাশাপাশি, একেবারে দুর্বল হয়ে পড়া জেলা কলকাতায় বিমানবাবু, সূর্যবাবুর সঙ্গে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রবীন দেবকে। তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের পুরনো দায়িত্ব থেকেও সরানো হয়নি। ওই জেলায় রবীনবাবুর সঙ্গে যৌথ দায়িত্ব মিনতি ঘোষের। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘শুধু জেলায় গিয়ে এক দিন বৈঠক করে চলে এলাম— এই সংস্কৃতিতে বদল আনতে চাওয়া হচ্ছে।’’