বিজেপিকে ঘিরতে টানা পথে সিপিএম

সিপিএমের লক্ষ্য, রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে পরিসর না দেওয়া। এবং সেই সঙ্গেই সংগঠনকে ফের চাঙ্গা করার চেষ্টা।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৫:১৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

নিজের অভিজ্ঞতায় আবদুল্লা রসুল দেখেছিলেন, তেভাগার জেরে কৃষক আন্দোলন যেখানে যেখানে ছড়িয়েছিল, সেখানে দেশভাগ পরবর্তী দাঙ্গা ছাপ ফেলতে পারেনি। মহম্মদ ইসমাইলের অভিজ্ঞতা ছিল, ট্রেড ইউনিয়নের আন্দোলন যেখানে শক্তিশালী, সেখানে শ্রমিকেরাই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা রুখে দিয়েছেন। পুরনো নেতাদের সে সব কাহিনি কাজে লাগিয়ে আজকের বাংলায় বিভাজন ও মেরুকরণের রাজনীতি রুখতে দলের সব ফ্রন্টকে নিয়ে রাস্তায় নামছে সিপিএম।

Advertisement

সিপিএমের লক্ষ্য, রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে পরিসর না দেওয়া। এবং সেই সঙ্গেই সংগঠনকে ফের চাঙ্গা করার চেষ্টা। চার বছর আগের কলকাতা প্লেনামের নানা সিদ্ধান্ত লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে ফের পর্যালোচনা করে দেখেছে সিপিএম। তখনই ধরা পড়েছে, বহু সিদ্ধান্তই কার্যকর হয়নি। তার পরেই ছাত্র, যুব, মহিলা, কৃষক ও শ্রমিক সংগঠন নিজস্ব কর্মসূচি নিয়েছে অগস্ট ও সেপ্টেম্বর জুড়ে। শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলন জারি থাকবে পুজোর পরে নভেম্বর-ডিসেম্বরেও। আর জেলায় জেলায় সেপ্টেম্বরে দলীয় সমাবেশ করবে সিপিএম। এরই পাশাপাশি আবার বামফ্রন্টের কর্মসূচি এবং কংগ্রেসকে নিয়ে কোথাও পতাকা ছাড়া, কোথাও পতাকা নিয়ে ‘বৃহত্তর গণতান্ত্রিক’ কর্মসূচিও চলবে।

বাম সূত্রের খবর, খাদ্য আন্দোলনের বর্যপূর্তি উপলক্ষে আগামী ৩১ অগস্ট সমাবেশ করতে চলেছে কৃষক সভা। তার আগে আছে জেলায় জেলায় স্থানীয় দাবিতে মিছিল ও বিক্ষোভ সভা। অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে সিটু রাজ্যের শ্রম দফতর অভিযানের ডাক দিয়েছে ২২ অগস্ট। রেলের ছাপাখানা বন্ধ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের যে সিদ্ধান্ত নরেন্দ্র মোদীর সরকার নিয়েছে, তার বিরোধিতায় ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় শ্রমিক সংগঠনগুলির কনভেনশন। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের কর্মীদের নিয়ে সমাবেশ ২০ সেপ্টেম্বর। উৎসবের সময়ের বিরতির পরে আবার ২৮ নভেম্বর চিত্তরঞ্জন থেকে শুরু করে ১০ ডিসেম্বর কলকাতা পৌঁছবে সিটু, আইএনটিইউসি-সহ শ্রমিক সংগঠনগুলির ‘লং মার্চ’।

Advertisement

শিল্প ও কর্মসংস্থানের করুণ হালের প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে চাকরির আবেদন জড়ো করার জন্য জেলায় জেলায় শিবির করেছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। ছাত্র সংগঠন এসএফআই প্রতিবাদ চালাচ্ছে মোদী সরকারের নতুন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে। চাকরি এবং কম খরচে শিক্ষার দাবিতে যুব ও ছাত্র সংগঠন মিলে ‘সিঙ্গুর থেকে নবান্ন চলো’র ডাক দেওয়া হয়েছে ১২-১৩ সেপ্টেম্বর। একই সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ রয়েছে তাদের।

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘আর্থিক সমস্যার জেরে এবং কাজের সুযোগ না থাকায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়। সেই হতাশাকেই আবার বিজেপি-আরএসএসের বিভেদকারী শক্তি কাজে লাগাচ্ছে কল্পিত শত্রু তৈরি করে মানুষকে ধর্মান্ধতা বা সাম্প্রদায়িকতা, বিভাজনের অন্ধকারে ঠেলে দিতে। আমরা চেষ্টা করছি, রুটি-রুজির লড়াইয়ে গিয়ে মানুষের দৃষ্টি আসল সমস্যার দিকে ফেরাতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement