নেতৃত্বে পরিবর্তন চাই, দাবি আসছে আলিমুদ্দিনে

লোকসভা নির্বাচনে এ বার নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পরে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়েছে সিপিএম

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:২৩
Share:

সীতারাম ইয়েচুরি।

দেশের জনসংখ্যার ৭০%-এরই গড় বয়স চল্লিশের আশেপাশে। কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে হলে সংগঠনকেও সে ভাবে সাজাতে হবে বলে দাওয়াই দিয়ে গিয়েছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। এ বার সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্যদের বেশির ভাগই লিখিত ভাবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে জানালেন, তাঁরা সর্বস্তরের নেতৃত্বে ঢালাও রদবদল চান।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনে এ বার নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পরে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়েছে সিপিএম। সেই লক্ষ্যেই দলের রাজ্য কমিটির সদস্যদের মতামত জানাতে বলেছিল আলিমুদ্দিন। সময়সীমা ধার্য হয়েছিল ১৫ অগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরনোর পরে দেখা যাচ্ছে, সব জেলা থেকে রাজ্য কমিটির সদস্যদের মতামত এখনও রাজ্য দফতরে পৌঁছয়নি। এমনকি, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সব সদস্যও তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট প্রো-ফর্মা মেনে বক্তব্য জমা দেননি। তাই মতামত সংগ্রহের মেয়াদ আরও বাড়াতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে। হাতে চলে আসা প্রস্তাব নিয়েও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।

সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটির সাধারণ সদস্যদের মধ্যে বেশির ভাগের মতই উপর থেকে নীচে পর্যন্ত নানা কমিটির খোল-নলচে বদলের পক্ষে। রাজ্য দফতরে লিখিত ভাবে সেই সওয়ালই তাঁরা করেছেন। পরিবর্তনপন্থীদের যুক্তি, লাগাতার বিপর্যয়ের জেরে পিঠ এখন দেওয়ালে ঠেকেছে। সর্বস্তরে নতুন মুখ এনে পরীক্ষা চালিয়ে জনসমর্থন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করার এটাই উপযুক্ত সময়। বড়সড় বদল না আনলে বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরে পাওয়া কঠিন বলেই তাঁরা মনে করছেন।

Advertisement

দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘রাজ্য থেকে শুরু করে একেবারে স্থানীয় স্তর পর্যন্ত কমিটিগুলির পুনর্বিন্যাস করে নতুন মুখকে দায়িত্ব দেওয়া দরকার। তুলনায় তরুণ বয়সের নেতা-কর্মীদের সামনে এনে রাস্তায় নেমে লড়াই চলুক।’’ বিপর্যয়ের পরে সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরাও দলের অন্দরে বলেছেন, পদ আঁকড়ে তাঁরা কেউ থাকতে চান না। প্রয়োজন হলে তাঁরা সরে দাঁড়াতে পারেন। কিন্তু সিপিএমের পদ্ধতিগত জটিলতার মধ্যে সেই কাজ কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় আছে।

কমিটি এবং নেতৃত্বে রদবদল হয় সিপিএমের সম্মেলনে। আগামী বছরের শেষ দিকে নিচু তলা থেকে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে দলের রাজ্য সম্মেলন হওয়ার কথা ২০২১ সালে। তার আগে মাঝপথে সব নেতারা দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন কী ভাবে, রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যেই সেই প্রশ্ন আছে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘একসঙ্গে সবাই সরে দাঁড়ালে যে পরিস্থিতি হবে, তা সংগঠনের পক্ষে খুব বাঞ্ছনীয় নয়। ভারসাম্য রেখেই এগোতে হবে।’’ সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, রাজ্যের শীর্ষ স্তর থেকে শুরু করে নিচু তলা পর্যন্ত সব কমিটিতে বয়স এবং কর্মীদের নানা অংশের প্রতিনিধিত্বের অনুপাতিক কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে আপাতত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement