শতরূপ ঘোষ গাড়ি কেনার কথা স্বীকার করে টাকার উৎস জানালেন। ফাইল ছবি।
২২ লাখের গাড়ি যে কিনেছেন, অস্বীকার করলেন না সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। প্রকাশ্যে আনলেন এই টাকার উৎসও।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার সকালে টুইট করে জানান, শতরূপ সম্প্রতি ২২ লাখ টাকা দামের একটি গাড়ি কিনেছেন। সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী হয়েও কী ভাবে এত দামি গাড়ি তিনি কিনলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া শতরূপের সম্পত্তির হিসাবও প্রকাশ্যে এনে দেখিয়েছেন তিনি।
কুণালের প্রশ্নের জবাবে দুপুরে আলিমুদ্দিন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন শতরূপ। তিনি জানান, গাড়ি কেনা হয়েছে তাঁর নামে। কিন্তু ওই গাড়ির দাম দিয়েছেন তাঁর বাবা শিবনাথ ঘোষ। সিংহভাগ খরচই করা হয়েছে চেকের মাধ্যমে। কিছু টাকা নগদেও দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের সামনে খরচের রসিদ দেখিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব প্রকাশ করেছেন সিপিএম নেতা। কবে, কোন ব্যাঙ্ক থেকে কত টাকা খরচ করা হয়েছে, তা-ও জানিয়েছেন। হিসাব দিয়েছেন বাবার ফিক্সড ডিপোজ়িটে সঞ্চিত অর্থেরও।
শতরূপের বক্তব্য, এর পরেও গাড়ির খরচের বিষয়ে কোনও অনিয়ম চোখে পড়লে শাসকদল আইনি পদক্ষেপ করতেই পারে। তিনি কার টাকায় গাড়ি কিনবেন, তা তৃণমূল ঠিক করে দিতে পারে না।
কুণাল তাঁর টুইটে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শতরূপকে কটাক্ষ করেছিলেন। তিনি নথি প্রকাশ করে দেখিয়েছিলেন, হলফনামা অনুযায়ী, ওই নির্বাচনে কসবার সিপিএম প্রার্থী শতরূপের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। সেই সম্পত্তি নিয়ে কী ভাবে সিপিএমের এক জন ‘হোলটাইমার’ গাড়ি কিনতে এত খরচ করলেন, প্রশ্ন তুলেছিলেন কুণাল। সাংবাদিক সম্মেলনে সে সব প্রশ্নের জবাব দিলেন শতরূপ।
যদিও শতরূপের বিরুদ্ধে কুণালের মূল অভিযোগ নীতিগত প্রশ্নে। শতরূপ মার্কসবাদ, লেনিনবাদে বিশ্বাসী সর্বহারাদের দলের নেতা। তিনি কোন নীতিতে ২২ লাখ টাকা দামের গাড়ি চড়েন? প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। তার উত্তর শতরূপ সাংবাদিক বৈঠকে দেননি।
এর আগে কুণাল সিপিএমের আর এক নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর চাকরির প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তৃণমূলের তরফে একটি চিঠির প্রতিলিপি প্রকাশ করে দাবি করা হয়, পরীক্ষা দিয়ে নয়, চিরকুটের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন সুজনের স্ত্রী। গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে তিনি দীর্ঘ দিন চাকরি করেন। বর্তমানে ভোগ করছেন পেনশনও। যদিও, বেআইনি ভাবে নিয়োগের অভিযোগকে ‘সর্বৈব মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন মিলি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, চাকরির ইন্টারভিউতে তিনিই প্রথম হয়েছিলেন। জয়েনিং লেটারকে সুপারিশপত্র বলে দাবি করছে শাসকদল। মিলির চাকরির বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বাংলার রাজনীতিতে চর্চা চলছে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই কুণালবাণে বিদ্ধ আর এক সিপিএম নেতা।