—প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় বাহিনী বা রাজভবনের মুখাপেক্ষী হয়ে নয়। গণ-প্রতিরোধে ভরসা রেখেই এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের ময়দানে থাকছে সিপিএম। তাদের মতে, তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি ও অপশাসন এবং বিজেপির সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নীতি থেকে পরিত্রাণের রাস্তা মানুষই খুঁজে নেবেন। তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করেছে বলে সিপিএমের দাবি। তৃণমূল ও বিজেপি অবশ্য প্রত্যাশিত ভাবেই সিপিএমের এই অবস্থানের বিরোধিতা করছে।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন-পর্বে শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ হয়েছে বিরোধী সিপিএমের। অন্য দিকে, সন্ত্রাস বা মনোনয়ন তুলতে চাপ দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে বারেবারেই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট সম্ভব নয় বলেও তারা একাধিক বার দাবি করেছে।
এমতাবস্থায় রাজভবন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলে সিপিএম বিজেপির থেকে তাদের অবস্থান আলাদা করতে চাইছে বলেই বাম সূত্রের ব্যাখ্যা। ওই সূত্রের মতে, গণ-প্রতিরোধ এবং নিজেদের সংগঠনে ভরসা রেখে ভোট লড়ে বিরোধী পরিসরে ‘হৃত জমি’ ফিরে পেতে চাইছে সিপিএম।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সোমবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা গণ-প্রতিরোধের কথা বলেছি। ‘গণ’-তে এত ভয় কেন? মুখ্যমন্ত্রী বলবেন, অশান্তি হলে ব্যবস্থা নেব। তার বদলে তিনি বলছেন, প্রতিরোধ হলে আমরাও প্রতিবাদ করব! দুষ্কৃতী বাহিনীকে ভরসা দিচ্ছেন। আর বিজেপি যখন দেখছে নিজেদের নেতাদের দিয়ে হচ্ছে না, রাজ্যপালকে নামিয়েছে আসরে! তিনি রাজভবনে ‘পিস রুম’ খুলে নাটক করছেন!’’
কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতেও অন্য বিরোধীদের মতো আদালতে যায়নি সিপিএম। সেলিম মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? মণিপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বিজেপি সরকার পরিস্থিতি সামলাতে পেরেছে? সমাধান বার করতে হবে মানুষকেই। পঞ্চায়েতে ঘুঘুর বাসা ভাঙতে মানুষ এ বার বদ্ধপরিকর।’’
রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সিপিএম এখনও মূল শত্রু চিনে উঠতে পারল না বলে তাদের দিশাহারা অবস্থা। এই সময়ে বিজেপি-বিরোধিতায় সব রকম জোর দেওয়া উচিত। সিপিএম দু’কূল রাখতে গিয়ে কোনও দিকেই থাকছে না!’’ আবার রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘যে রাজ্যে বিডিও-রা শাসক দলের তাঁবেদারি করছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেই সব সমস্যার সমাধান হবে, এটা মনে করার কারণ তো নেই-ই। সিপিএম নীতিগত ভাবে রাজ্যপাল পদও বিলুপ্ত করার পক্ষপাতী। তবে মোদী-বিরোধিতা করতে গিয়ে তাদের সুর তৃণমূলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে!’’