—প্রতীকী ছবি।
ধারাবাহিক ভোট বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে মানুষের মতামত জানতে চেয়ে ই-মেল ঠিকানা দিয়েছিল সিপিএম। দলীয় সূত্রের খবর, সেই ঠিকানায় জমা হচ্ছে সংগঠন ও আন্দোলন গড়ে তোলায় ব্যর্থতার প্রচুর অভিযোগ। আবার বামেদের ‘ভুল রাজনীতি ও নির্বাচনী কৌশল’কে পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে দাবি করেছেন অনেকে। সিপিএম সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পাঁচ হাজারের বেশি ই-মেল এসেছে।
এ বার লোকসভা ভোটে আসনের খাতা শূন্যই রয়েছে সিপিএমের। ভোটের ফল পর্যালোচনায় পরিচিত গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত জানতে চেয়েছে সিপিএম। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসা সে সব পরামর্শের নির্যাস লিখে পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট জায়গায়।
সূত্রের খবর, একাধিক ব্যক্তি লিখেছেন, এখনও সিপিএমে ‘দলবাজি’ চলছে। ‘এলিট-সুলভ’ মানসিকতা রয়ে গিয়েছে। অনেকে লিখেছেন, গ্রামে সিপিএমের সংগঠন বাড়ানোর উদ্যোগ তেমন চোখে পড়েনি। শাখা স্তরে আন্দোলন কার্যত হয়নি। নিচু স্তরে অনেক সিপিএম নেতা তৃণমূলের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ রেখে চলেন। তৃণমূল জমানায় তৈরি শিক্ষিত বেকারদের সংগঠনে আনার উদ্যোগ নেই। এখনও দলের নিচু তলার অনেক নেতা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে ‘মিথ্যা রিপোর্ট’ দেন। এক ব্যক্তি লিখেছেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’ অভূতপূর্ব কাজ করে মানুষের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের নিয়ে সিপিএমের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় অনেকেই হারিয়ে গিয়েছেন। সংখ্যালঘু, কুড়মি, আদিবাসী, নেপালি, রাজবংশী, মতুয়া সম্প্রদায় থেকে নেতা তুলে আনা যায়নি। তবে তরুণ প্রজন্মকে দলে ও নির্বাচনী লড়াইয়ে সামনে আনার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বহু মানুষ।
এক ব্যক্তির বক্তব্য, রাজ্যের ৪০-৫০% ভোটার নির্দিষ্ট কোনও পক্ষের নয়। এই ‘ভাসমান’ ভোটারদের বা মহিলা নির্বাচকমণ্ডলীকে প্রভাবিত করার মতো স্লোগান, কর্মসূচি নেই। ক্লাব, পুজো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টাও দেখা যায়নি।
এক সিপিএম শুভানুধ্যায়ীর পরামর্শ, বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এখনই প্রার্থী নির্বাচন করুক বামেরা। সেই সব প্রার্থীরা জনসংযোগে মন দিন। সাংগঠনিক শক্তি অন্য জায়গার তুলনায় বেশি, এমন বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে এই কৌশল জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে। সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে সিপিএমের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, ‘‘ক্ষেতমজুর সংগঠনকে চাঙ্গা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’