—ফাইল চিত্র।
আগামী ১০ মার্চ, রবিবার ব্রিগেডে ‘জনগর্জন সভা’ ডেকেছে তৃণমূল। তৃণমূলের ব্রিগেডের দিনেই যে সিপিএম সন্দেশখালিতে সভা করতে চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, তা সবচেয়ে আগে লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইনই। বুধবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে ঠিক হয়েছে, শুধু সন্দেশখালি নয়, ১০ মার্চ উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে ১০টি জায়গায় ‘মার্চ’ করবে সিপিএম তথা বামেরা।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘ওই দিন ১০টি জায়গায় সভা হবে। তবে জায়গাগুলি এখনও চূড়ান্ত নয়। দু’এক দিনের মধ্যেই তা ঠিক হয়ে যাবে।’’ সিপিএম সূত্রের খবর, জায়গা ঠিক করা এবং জেলাগুলির সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আভাস রায়চৌধুরীকে।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ মার্চের আগে-পরে আরও কিছু সভা করবে সিপিএম। তবে ১০ মার্চ নির্দিষ্ট করে ১০টি জায়গায় সভা করবে তারা। সেই স্থান দেখে লোকসভা ভোটে সিপিএমের অগ্রাধিকারের তালিকায় কোন কোন আসন রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে ওই দিন সন্দেশখালিতেও সভা করতে চায় আলিমুদ্দিন। যদিও বসিরহাট লোকসভা তাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে নেই বলেই খবর। তবে অগ্রাধিকারের ১০টি জায়গা ঠিক না হলেও দু’টি জায়গা সিপিএম ইতিমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছে। এক, মুর্শিদাবাদ এবং দুই, যাদবপুর।
গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে আনন্দবাজার অনলাইনে ধারাবাহিক ভাবে লেখা হয়েছে, সিপিএম ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে নির্দিষ্ট কিছু আসনে ‘ফোকাস’ করে লড়বে। তার মধ্যে যে মুর্শিদাবাদ অন্যতম, তা-ও লেখা হয়েছে একাধিক প্রতিবেদনে। বস্তুত, সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোচবিহার থেকে কলকাতা যে ‘ইনসাফ যাত্রা’ করেছিল, তাতেও সবচেয়ে বেশি দিন এবং বেশি পথ অতিক্রম করেছিল মুর্শিদাবাদ জেলাতেই। যাদবপুরেও পুরনো ভোট ফেরানোর বিষয়ে আশাবাদী সিপিএম। আলিমুদ্দিনের এ-ও আশা যে, আইএসএফ তথা নওশাদ সিদ্দিকি পাশে থাকলে ভাঙড়-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংখ্যালঘু ভোট তাদের বাক্সে আসতে পারে। পাল্টা তৃণমূলেরও যুক্তি রয়েছে। শাসকদলের বক্তব্য, বিজেপির মতো ‘ভয়ঙ্কর’ শক্তির বিরুদ্ধে যখন মুখোমুখি লড়াই, তখন সংখ্যালঘুরা কখনওই সিপিএমকে ভোট দিয়ে তাঁদের ভোট ‘নষ্ট’ করবেন না।
সন্দেহ নেই, ১০ মার্চ তৃণমূল ব্রিগেডে বড় জমায়েত করবে। তেমনই প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। সিপিএম ওই দিনই পাল্টা সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন চাইছে জেলায় জেলায়। অগ্রাধিকারের লোকসভা ধরে ধরে সেই জমায়েত করবে সিপিএম। তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকের বক্তব্য, সিপিএমের উদ্দেশ্য যতটা না তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করা, তার চেয়ে বেশি বিরোধী পরিসরে নিজেদের ‘অস্তিত্ব’ জানান দেওয়া। ১০ মার্চের সেই কর্মসূচি সিপিএম কতটা সফল করতে পারে, সে দিকেও নজর থাকবে রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলের।